'এমন ভোটকেন্দ্র আগে দেখিনি'

গ্রামের এক কোণে টিনের দোচালা ঘর। অনেকটা কুঁড়েঘরের মতো। ভেতরে ছোট দুটি কক্ষ। আশপাশে জঙ্গল। যাতায়াতের পথ নেই। সড়ক থেকে নেমে ফসলি জমি মাড়িয়ে সেখানে যেতে হয়। নারী-পুরুষ ভোটারের জন্য একটাই বুথ। প্রয়োজনীয় চেয়ার-টেবিল নেই। কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে।
এটি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার গজরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কবির হোসেন টিটু মুন্সীর বাড়ি ভোটকেন্দ্রের চিত্র। গতকাল শনিবার সেখানে ষষ্ঠ ধাপের ভোট হয়। এখানে ভোটার ৬৮৯ জন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় সেখানে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হচ্ছে না। সংরক্ষিত সদস্যপদে দুজন এবং সাধারণ সদস্যপদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বেলা ১১টায় ওই ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় কেন্দ্রের বাইরে ১৫-১৬ জন পুলিশ সদস্যের জটলা। কেন্দ্রের ভেতরের একটি কক্ষে বসে আছেন অনেক লোক। জিজ্ঞেস করে জানা যায়, তাঁদের একজন প্রিসাইডিং, দুজন সহকারী প্রিসাইডিং, চারজন পোলিং কর্মকর্তা ও ১২ জন পোলিং এজেন্ট। তাঁদের পাশেই একটি বুথ। দু-একজন ছাড়া ভোটারের তেমন উপস্থিতি নেই। বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দু-তিনজনকে ভোট দিতে দেখা গেল। যদিও কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের দাবি, সকালের দিকে ভোটারদের ভিড় ছিল এবং এরই মধ্যে ৩০ শতাংশ ভোট পড়েছে।
কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এখানে ভোট নেওয়ার পরিবেশ নেই। এমন ভোটকেন্দ্র আগে কখনো দেখিনি। একটি ব্যক্তিগত বাড়ি কখনোই ভোটকেন্দ্র হতে পারে না। বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।’
৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থী মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, কেন্দ্রের বেহাল অবস্থা দেখে ভোটাররাও ভোট দিতে আসছেন না। আসা-যাওয়ার ভালো পথ নেই। জঙ্গলের ভেতরে একটি ছোট্ট ঘরে ভোট হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং ওই ইউপি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী হেকমত আলী বলেন, ওই ভোটকেন্দ্রের আশপাশে কোনো বিদ্যালয় নেই। এ জন্য এক ব্যক্তির ঘরকেই ভোটকেন্দ্র বানানো হয়েছে। আগামী নির্বাচনে এখানে কেন্দ্র থাকবে না।