অধ্যাপক সফিউল্লাহর সঠিক মূল্যায়ন হয়নি

গজদন্ত মিনারে বসে বিজ্ঞানচর্চা করতেন না অধ্যাপক সৈয়দ সফিউল্লাহ। তিনি জনগণের জন্য যে বিজ্ঞান প্রয়োজন, তার চর্চা করতেন। বাংলাদেশ ও বিশ্বের পরিবেশগত সংকটের দিকে আলোকপাত করা থেকে শুরু করে কৃষকের জন্য ফসলের সুষম সার নিয়েও তিনি গবেষণা করেছেন। কিন্তু তাঁর এসব গবেষণার কোনো সঠিক মূল্যায়ন করা হয়নি।
গতকাল রোববার আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ সফিউল্লাহ স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেছেন। ভাসানী অনুসারী পরিষদের আয়োজনে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা প্রয়াত এই বিজ্ঞানীর উদ্ভাবন ও চিন্তাকে জনগণের স্বার্থে কাজে লাগানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। এর মাধ্যমেই তাঁকে স্মরণ রাখা যাবে বলেও তাঁরা মন্তব্য করেন।
সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে আতঙ্কজনক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা এমন বিপদে আছি যে সামনের দিনে কী হবে, তা কল্পনা করতেও ভয় লাগে।’ এই পরিস্থিতিতে সৈয়দ সফিউল্লাহর মতো মানুষের দরকার উল্লেখ করে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘সফিউল্লাহ এমন একজন মানুষ ছিলেন, যিনি এই সমাজটাকে বদলাতে চাইতেন। তাই তিনি সব সময় অশান্ত থাকবেন। এমন অশান্ত মানুষই আমাদের এখন দরকার।’
সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আমরা জাতি হিসেবে অস্থিরতায় ভুগছি। এই অস্থির সময় থেকে উত্তরণের জন্য দল-মতনির্বিশেষে আলোচনা দরকার।’ বুলেট নয়, ব্যালটের মাধ্যমে বর্তমান সংকট দূর করার পক্ষে মত দেন তিনি।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনো অধ্যাপক সফিউল্লাহর রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে জড়িত হয়ে সফিউল্লাহ ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গেও তাঁর সব সময় সম্পর্ক ছিল।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সফিউল্লাহ আরও কিছুদিন বাঁচতে পারতেন। কিন্তু বিনা বিচারে হত্যার এই দেশে তিনি হয়তো আর বাঁচতে চাননি। তিনি বলেন, ‘সফিউল্লাহ ৭০–এর দশকেই বলেছিলেন ভারত বাংলাদেশকে পানি দেবে না। শুকিয়ে মারবে। এখন এত বছর পর আমরা দেখছি সেই ভারতের নিয়ন্ত্রণে পুরো দেশ চলে গেছে।’