পাসপোর্ট বিভাগের পরিচালকসহ দুজন গ্রেপ্তার

মিথ্যা তথ্য ও জাল অনাপত্তি সনদ দেখিয়ে সরকারি কর্মকর্তা নন এমন নাগরিকদের ‘অফিশিয়াল পাসপোর্ট’ দেওয়ার অভিযোগে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একজন পরিচালক ও একজন কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ অভিযোগে গতকালই পাসপোর্ট অফিসের ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

গ্রেপ্তার হওয়া দুজন হলেন ঢাকার আগারগাঁওয়ের বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মুন্সী মুয়ীদ ইকরাম ও একই অফিসের উচ্চমান সহকারী সাইফুল ইসলাম। এ দুজন সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়েছেন বেশ কিছুদিন আগে।

দুদকের উপপরিচালক বেনজীর আহমেদ অনুসন্ধান শেষে মামলা করেন। তাঁর নেতৃত্বে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালিত হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়ার সই জাল করে ১৮ জনের নামে অনাপত্তিপত্র তৈরি করেন। পরে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিয়ে সাধারণ পাসপোর্টকে অফিশিয়াল পাসপোর্টে রূপান্তর করেন। ওই সব অবৈধ পাসপোর্টের মাধ্যমে পাসপোর্টধারীরা সরকারি কর্মচারী হিসেবে অবৈধভাবে তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশে যান এবং পরবর্তী সময়ে গ্রেপ্তার হন। অনাপত্তিপত্রগুলো জাল ও ভুয়া জানা সত্ত্বেও তা যাচাই না করে আসামিরা অফিশিয়াল পাসপোর্ট ইস্যু করেছেন।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মুন্সী মুয়ীদ ইকরামের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে ৪২ লাখ টাকা জমা হয়েছে।

মামলায় বলা হয়, ১৮ জনের নামে পাসপোর্ট তৈরি করে বিদেশে যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে আরও অনেককে এভাবে পাসপোর্ট দেওয়ার তথ্য রয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে মোট ৬৬ জনকে সরকারি পাসপোর্ট দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

সরকারি কর্মকর্তা সাজিয়ে মানবপাচারের এ ঘটনাটি জানাজানি হয় তুরস্ক সরকারের এক চিঠির সূত্র ধরে। গত বছরের শুরুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া এক চিঠিতে তুরস্ক বাংলাদেশের সরকারি পাসপোর্ট ব্যবহারকারী তিনজনের একটি তালিকা পাঠায়। বিষয়টি তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানায় বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর।