আ.লীগ-বিএনপির সংঘর্ষে নিহত ১

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের তৃতীয় দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিন গতকাল রোববার সুনামগঞ্জের ছাতক শহরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে ৫০ জন আহত হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছাত্রলীগের এক কর্মী মারা যান। চাঁদপুরে গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করা হয়। শেরপুরে তিনটি ইজিবাইক ভাঙচুর করা হয়। ঢাকার বাইরে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
সুনামগঞ্জ: জেলায় স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের ডাকা হরতাল চলাকালে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ছাতক শহরে ছাত্রদলের কর্মীদের পিকেটিংয়ে বাধা দেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। বিকেলে দুই পক্ষই শহরে নিজ নিজ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কার্মীরা মিছিল নিয়ে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর চালান এবং ভেতরের আসবাব রাস্তায় এনে আগুন ধরিয়ে দেন।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৭০টি শটগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে প্রায় ৫০ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে ২০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসুদুল ইসলাম তালুকদার (১৯) নামের ছাত্রলীগের এক কর্মী মারা যান। তিনি ছাতক ডিগ্রি কলেজের ছাত্র এবং উপজেলার দীঘলবন্দ গ্রামের মৃত কালা মিয়ার ছেলে।অন্যরা ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ সোমবার ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি।
চাঁদপুর: গতকাল ভোরে সদর উপজেলায় চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের বাবুরহাট থেকে মহামায়া পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার সড়কে গাছ ফেলে অবরোধ করা হয়। এ সময় চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং করা হয়।
মাধবপুর (হবিগঞ্জ): ঢাক-সিলেট মহসড়কের হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ডাক্তারবাড়ী গেট নামক স্থানে শনিবার রাতে একটি পিকআপে অগ্নিসংযোগ ও দুটি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়।
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার): জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের ডাকা আজকের হরতাল ও অবরোধের সমর্থনে উপজেলা ছাত্রদল ও যুবদলের উদ্যোগে মিছিল শেষে চৌমুহনা চত্বরে সভা হয়। সভার শেষ মুহূর্তে পুলিশ অতর্কিত লাঠিপেটা শুরু করে। একপর্যায়ে ছাত্রদলের কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। বিএনপির চার নেতা ও এক পুলিশ কনস্টেবল আহত হন।
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ): ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব বাসস্ট্যান্ডে ও ভৈরব-ময়মনসিংহ সড়কের শম্ভুপুর এলাকায় গতকাল সকালে অবরোধকারীরা অবস্থান নিয়ে যান চলাচলে বাধা দেন। তবে র‌্যাব-পুলিশের বাধায় অবরোধকারীরা সড়ক থেকে সরে যেতে বাধ্য হন। পরে তাঁরা সড়কের পাশে প্রতিবাদ সভা করেন। সকালে একই জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার আগরপুর এলাকায় পুলিশের সঙ্গে অবরোধকারীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়।
শেরপুর: ভোরে জেলা সদরের কুসুমহাটি এলাকায় অবরোধকারীরা তিনটি ইজিবাইক ভাঙচুর করেন। এ সময় তাঁরা শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের কুসুমহাটি এলাকায় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধের চেষ্টা করেন।