কাউনিয়া রেলওয়ে জংশন নানা সমস্যায় জর্জরিত

রংপুরের কাউনিয়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রতিবছর কোটি টাকার ওপরে আয় হয়। কিন্তু স্টেশনটিতে গণশৌচাগার নেই। বিশ্রামাগার অপরিচ্ছন্ন। সেই সঙ্গে ভবনের ছাদ চুইয়ে পড়ে বৃষ্টির পানি। এ ছাড়া লোকবল-সংকটসহ রয়েছে নানা সমস্যা।
রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, স্টেশনটি ১৯০৩ সালে স্থাপন করা হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এই স্টেশন থেকে ১ কোটি ৩৫ লাখ ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আয় হয়েছে। কিন্তু স্টেশনটিতে উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। অথচ রেলপথে রংপুর থেকে ঢাকা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও বুড়িমারী স্থলবন্দর যেতে হলে কাউনিয়া রেলওয়ে জংশন অতিক্রম করতে হয়। প্রতিদিন এই স্টেশন দিয়ে শত শত যাত্রী যাওয়া-আসা করেন। এই রেলওয়ে জংশন হয়ে প্রতিদিন ২৬টি ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে আন্তনগর আটটি, মেইল আটটি, লোকাল চারটি ও ছয়টি কমিউটার ট্রেন রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায়, স্টেশনটিতে প্রথম শ্রেণির একটি বিশ্রামাগার থাকলেও সেটি বন্ধ। এ বিষয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, প্রথম শ্রেণির যাত্রী নেই। সেই সঙ্গে এটি তদারকির জন্য নেই কোনো আয়া।
স্টেশন ভবনের তিনটি কক্ষই ঝুঁকিপূর্ণ। বৃষ্টির পানি ছাদ ও দেয়াল চুইয়ে পড়তে দেখা গেছে। দেয়ালগুলো স্যাঁতসেঁতে হয়ে পড়েছে। প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের বসার জন্য নেই কোনো ব্যবস্থা। তবে খুঁটির সঙ্গে ছোট তিনটি গোল চক্কর রয়েছে। সেখানে কয়েকজন বসতে পারেন। দ্বিতীয় শ্রেণির একটি বিশ্রামাগার আছে। তা অপরিষ্কার। কোনো গণশৌচাগার নেই।
যাত্রীদের অভিযোগ, গণশৌচাগার না থাকায় বিশেষ করে নারী যাত্রীদের বিড়ম্বনার শেষ নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী যাত্রী বলেন, প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে কী যে কষ্ট হয়। এই যুগে এসে এসব স্টেশনে শৌচাগার থাকবে না, তা কি কখনো হয়? স্টেশনের শহীদ মোফাজ্জল হোসেন বলেন, পদচারী-সেতুটিও বেহাল হয়ে পড়েছে। সেতুর নিচে পলেস্তারা খসে পড়ছে। রড বেরিয়ে গেছে। এ ছাড়া রেললাইনে ঝোপজঙ্গল হয়েছে।
কাউনিয়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সরদার আবদুল হাকিম বলেন, জংশনটি ঘিরে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে উঠেছিল। রেলপথে এ স্টেশনের গুরুত্ব এখনো রয়েছে। এই স্টেশনের দুরবস্থা দূর করা প্রয়োজন।
স্টেশনমাস্টার বাবু আল রশিদ বলেন, এখানে ৩৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ২১ জন। এর মধ্যে বিদ্যুতের দুজন কর্মচারী ও দুজন সুইপারের মধ্যে একজনও নেই। ছয়জন স্টেশনমাস্টারের বিপরীতে আছেন তিনজন। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। শুধু আশ্বাসের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু অবকাঠামোর সংস্কারসহ কোনো উন্নয়নই আর হয় না।