উপবৃত্তির আড়াই কোটি টাকা ফেরত গেছে

ময়মনসিংহের নান্দাইল ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত গেছে।

শিক্ষকেরা বলছেন, বিদ্যালয়ে শতকরা ৮৫ ভাগ উপস্থিত না থাকলে শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তির পুরো অর্থ পায় না। কিছু মানুষ ঘন ঘন পেশা পরিবর্তন করে পরিবারসহ অন্যত্র চলে যায়। ফলে শিশুরা বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিত থাকতে পারে না। এভাবে তারা উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলী সিদ্দিকী বলেন, এখানে ১২৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের ৪৩ হাজার ২৮৩ জন উপবৃত্তিধারী শিক্ষার্থীর ১২ মাসের জন্য ৪ কোটি ৭৮ লাখ ১ হাজার ২০০ টাকা আসে। গত জুলাইয়ে উপবৃত্তি
দেওয়া হয়। বরাদ্দ থেকে প্রায় ৪৭ লাখ ৪১ হাজার টাকা ফেরত গেছে।

নান্দাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সহকারী মুসলেম উদ্দিন বলেন, এখানে ১৬৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

এসব বিদ্যালয়ের ৪৮ হাজার ১৪৩ জন তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীর জন্য ৭ কোটি ২৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। উপবৃত্তি বিতরণের পর ২ কোটি ১২ লাখ ২১ হাজার ৮২৫ টাকা ফেরত গেছে।

ঈশ্বরগঞ্জের ৫৮ নম্বর নাউরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম বলেন, তাঁদের বিদ্যালয় থেকে উপবৃত্তির ২৩ হাজার ১৩৫ টাকা ফেরত গেছে। শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির কারণে নীতিমালার প্রধান শর্ত পূরণ না হওয়ায় অর্থ ফেরত গেছে।

কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত একাধিক শিক্ষক বলেন, অনেক অভিভাবক পেশা পরিবর্তন করে তাঁদের স্কুলপড়ুয়া সন্তানদের নিয়ে অন্যত্র চলে যান। অনেকে মাদ্রাসা বা বেসরকারি সংস্থার পরিচালিত বিদ্যালয়ে সন্তানদের ভর্তি করান। আবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি আছে এমন অনেক শিক্ষার্থীর নাম ঝরে পড়া শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠা করা আনন্দ স্কুলের খাতায় লিপিবদ্ধ রয়েছে। এসব কারণে উপবৃত্তির অর্থ ফেরত যাচ্ছে।

সম্প্রতি বিভিন্ন এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপবৃত্তি বিতরণের সময় টাকা কম দেওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা। কিন্তু পরে তদন্তে অনিয়ম প্রমাণিত হয়নি।