'সুন্দরবন রক্ষা করা এখন বাঁচা-মরার সংগ্রাম'

চট্টগ্রামের স্টুডিও থিয়েটার মিলনায়তনে গতকাল রামপাল কয়লা  বিদু্্যৎ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন স্থপতি জেরিনা হোসেন l ছবি: প্রথম আলো
চট্টগ্রামের স্টুডিও থিয়েটার মিলনায়তনে গতকাল রামপাল কয়লা বিদু্্যৎ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন স্থপতি জেরিনা হোসেন l ছবি: প্রথম আলো

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রামে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, যে উন্নয়ন চিন্তাভাবনা না করে করা হয়, সেই উন্নয়ন টেকসই হয় না। মানুষকে ঝড়-ঝঞ্ঝা থেকে রক্ষা করে সুন্দরবন। অথচ সুন্দরবনের প্রাণিজগৎ রক্ষা করার কোনো চেষ্টা নেই। সুন্দরবন রক্ষা করা এখন বাঁচা-মরার সংগ্রামে পরিণত হয়েছে। সুন্দরবন রক্ষায় দেশপ্রেমিক নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার।
গতকাল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের স্টুডিও থিয়েটার মিলনায়তনে অবস্থান কর্মসূচি এবং সমাবেশ করেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির চট্টগ্রাম শাখার নেতারা। তাঁরা বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিরোধ আন্দোলনে দেশপ্রেমিক নাগরিক এবং রাজনৈতিক শক্তিকে সম্পৃক্ত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির চট্টগ্রাম শাখার আহ্বায়ক কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন স্থপতি জেরিনা হোসেন ও প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া।
আবুল মোমেন বলেন, ‘উন্নয়নের একটি দর্শন থাকতে হবে। আমরা রামপালের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ পাব। কিন্তু বিনিময়ে আমাদের অনেক মূল্যবান সম্পদ সুন্দরবনের ক্ষতি হবে। আমাদের এই সম্পদের কী হবে, সেটা মূল্যায়ন করতে পারেন বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তিবিদেরা। কিন্তু প্রযুক্তিবিদদের একটি অংশ এখন বিনিয়োগকারীদের পক্ষে চলে যাচ্ছে।’
একটি হাতি রক্ষা করার সামর্থ্য বাংলাদেশের নেই উল্লেখ করে আবুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার অভাব রয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে বছরে ৪৭ লাখ টন কয়লা পশুর নদ দিয়ে যাবে। এতে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে না, তার নিশ্চয়তা কে দেবে।’ তিনি বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইস্যু। দেশপ্রেমিক নাগরিকদের এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি রাজনৈতিক শক্তিকেও এর বিরুদ্ধে দাঁড় করানো দরকার।
জেরিনা হোসেন বলেন, সুন্দরবন রক্ষা করা এখন বাঁচা-মরার সংগ্রামে পরিণত হয়েছে।
সুভাষ বড়ুয়া বলেন, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না করে মত চাপিয়ে দেওয়া একধরনের স্বৈরাচারী মনোভাব। সুন্দরবন রক্ষায় দেশপ্রেমিক নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার।
কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির চট্টগ্রামের সদস্যসচিব দেলোয়ার মজুমদার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আতিকুর রহমান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অমৃত বড়ুয়া, ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন সেলিম, বাসদের (মার্ক্সবাদী) চট্টগ্রামের সদস্যসচিব অপু দাশগুপ্ত, বাসদ চট্টগ্রামের সমন্বয়ক মঈন উদ্দিন, সংস্কৃতিকর্মী সুনীল ধর প্রমুখ।