চিরিরবন্দরে ১৪৭ মিটার ব্রডগেজ রেলসেতু চালু

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার কারেন্টহাট এলাকায় কাঁকড়া নদীর ওপর নবনির্মিত ১৪৭ মিটার দীর্ঘ রেলসেতু l প্রথম আলো
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার কারেন্টহাট এলাকায় কাঁকড়া নদীর ওপর নবনির্মিত ১৪৭ মিটার দীর্ঘ রেলসেতু l প্রথম আলো

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার কারেন্টহাট এলাকায় কাঁকড়া নদীর ওপর ১৪৭ মিটার দীর্ঘ ব্রডগেজ রেলসেতুটি গতকাল সোমবার খুলে দেওয়া হয়েছে।

এর মাধ্যমে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুরের সঙ্গে রাজশাহী ও খুলনার সরাসরি রেলযোগাযোগ স্থাপিত হলো।

নতুন রেলসেতুটির মাধ্যমে একই সঙ্গে পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর হয়ে পার্বতীপুর পর্যন্ত ১৪০ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ এবং দিনাজপুর থেকে বিরল উপজেলার ভারত সীমান্ত পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার ব্রডগেজ পথে রেল চলাচল করতে পারবে।

দিনাজপুর রেলস্টেশনের তত্ত্বাবধায়ক গোলাম মোস্তফা বলেন, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটায় পঞ্চগড় থেকে পার্বতীপুরগামী কাঞ্চন এক্সপ্রেস দিনাজপুর স্টেশন থেকে কাঁকড়া নদীর ওপর নতুন সেতুটি পার হয়ে চিরিরবন্দর স্টেশনে যায়।

রেলসেতুটি খুলে দেওয়ার সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুল হক, দিনাজপুর রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হানিফ, রেলপথ ও সেতুর নকশা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসিই কনসালট্যান্ট লিমিটেডের আবাসিক প্রকৌশলী আমিনুল কবীর, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রজেক্ট বিল্ডার্স লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক গোলাম সারোয়ার, প্রকল্পের অন্যতম ব্যবস্থাপক সুশীল দাস কারেন্ট হাট রেলসেতু প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন।

লালমনিরহাটের বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুল হক বলেন, পার্বতীপুর থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত ১৪০ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ এবং দিনাজপুরের কাঞ্চন জংশন থেকে বিরলে ভারতের সীমান্তবর্তীরাধিকাপুর স্টেশন পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার ব্রডগেজসহ মোট ১৪৮ কিলোমিটার নতুন রেলপথের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এই পথে বিভিন্ন নদীর ওপর আটটি বড় ও ১৩২টি ছোট সেতু রয়েছে। নতুন এ রেলপথ নির্মাণে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

রেলপথ ও সেতু নির্মাণের তদারককারী প্রতিষ্ঠান এসিই কনসালট্যান্ট লিমিটেডের আবাসিক প্রকৌশলী আমিনুল কবীর বলেন, কাঁকড়া নদীর ওপর নির্মিত ৪৭ দশমিক ৫ মিটার রেলসেতুটি দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ গার্ডার রেলসেতু।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রজেক্ট বিল্ডার্স লিমিটেড ও স্ট্যান্ডার্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড যৌথভাবে রেলপথ নির্মাণ করে।

প্রজেক্ট বিল্ডার্সের নির্বাহী পরিচালক গোলাম সারোয়ার বলেন, অতীতে বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানি বাংলাদেশের রেলপথ ও সেতুর নকশা প্রণয়ন, পরামর্শক ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সব কাজ করেছে। এই প্রথম দেশের এত দীর্ঘ একটি রেলপথ বাংলাদেশ রেলওয়ে ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান দেশীয় জনবল ও মালামাল ব্যবহার করে নির্মাণ করল।

দিনাজপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আহমেদ রেজা ফারুক হুমায়ুন বলেন, দিনাজপুর থেকে বিরল উপজেলায় বাংলাদেশের সীমানা পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণের ফলে ২০০২ সাল থেকে বন্ধ হয়ে থাকা ভারত-নেপাল ও ভুটানেরসঙ্গে রেলপথ আবার চালু করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া পঞ্চগড় থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণের ফলে পিছিয়ে পড়া উত্তরের জেলাগুলোর সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগব্যবস্থার নতুন দ্বার খুলে গেল। এর ফলে এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে।