পুকুরে নিখোঁজ শিশুর বস্তাবন্দী লাশ

শিশু বাপ্পী । ছবি : সংগৃহিত
শিশু বাপ্পী । ছবি : সংগৃহিত

পোলট্রি ফার্মে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাজ করতে গিয়েছিল আট বছরের শিশু বাপ্পী। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার হদিস মিলছিল না। আজ বৃহস্পতিবার সকালে পুকুরে ভেসে ওঠা বস্তায় পাওয়া যায় বাপ্পীর লাশ।

নরসিংদীর শিবপুরে পুবের গাঁও এলাকার আলাল উদ্দিনের পুকুর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত বাপ্পী পুবের গাঁও এলাকার কাউসার ভূঁইয়ার ছেলে। সে পুবের গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

বাপ্পীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাপ্পীর বাবা কাউসার ভূঁইয়া পত্রিকায় হকারের কাজ করেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে বাপ্পী দ্বিতীয়। পরিবারে আর্থিক অনটন থাকায় বাপ্পী পড়াশোনার পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন পোলট্রি খামারে কাজ করত। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সে পুবের গাঁও এলাকার ফেরদৌসি বেগমের পোলট্রি খামারে কাজ করতে গিয়ে আর ফেরেনি। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ করেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। আজ বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় আলাল উদ্দিনের পুকুরে বস্তাবন্দী কিছু ভেসে উঠলে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পুকুর থেকে বস্তা তুলে আনে। এর ভেতরে লাশ পাওয়া যায়। এটি বাপ্পীর লাশ বলে শনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা।

কাউসার ভূঁইয়া বলেন, ‘আমার নিজের কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই। তবে কেন আমার নিষ্পাপ শিশুটিকে এভাবে হত্যা করা হলো কিছুই বুঝতে পারছি না।’

পুবের গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাপ্পী স্কুলের শান্ত ও ভদ্র ছেলে হিসেবে আমরা দেখেছি। পড়াশোনায়ও সে ভালো। এত অল্প বয়সেই পরিবারের কথা চিন্তা করে ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন মুরগির খামারে কাজ করত। আমরা এই হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবি করছি।’

উপজেলা চেয়ারম্যান আরিফ উল ইসলাম মৃধা বলেন, লাশের সুরতহালে দেখা গেছে নিহত বাপ্পীর মুখে পলিথিন গুঁজে রাখা হয়েছে। আর তার লাশ যে বস্তায় বন্দী করা হয়েছে, তা মুরগির খাবারের। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারের লোকজন সাধারণ ডায়েরি করেনি। আজ ১১টার দিকে একটি পুকুর থেকে বাপ্পীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।