মান চাইলে ৭৫ শতাংশ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করতে হবে

চিকিৎসকেরাই বলেছেন স্বাস্থ্যশিক্ষায় গুণগত মান চাইলে দেশের ৭৫ শতাংশ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দিতে হবে। আবার কিছু সরকারি মেডিকেল কলেজেও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক মতবিনিময় সভায় চিকিৎসকেরা এ কথা বলেন। সভায় চিকিৎসক শিক্ষকদের সমন্বয়ে মেডিকেল শিক্ষা কমিশন গঠন করে তাঁদের হাতে মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্ব দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
‘মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার সংকট ও সমাধান’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভার আয়োজন বামপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট। বর্তমানে দেশের ৩০টি সরকারি ও ৬৯টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। সরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএসে ভর্তিযোগ্য আসন আছে ৩ হাজার ২১২টি ও বেসরকারিগুলোতে আছে ৬ হাজার ২০৫টি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য নজরুল ইসলাম ঢালাওভাবে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অনুমোদনের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এখন বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে ২০-২২ লাখ টাকা দিতে হয়। এটা কি কোনো মেডিকেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো? কে দিয়েছে এসব অনুমোদন? যাঁরা দিয়েছেন, তাঁরা চিকিৎসা নিতে যাবেন সিঙ্গাপুরে। তিনি বলেন, ‘আমরা ডাক্তার বলে যাঁদের তৈরি করছি, তাঁদের কাছে কি আমরা চিকিৎসা নিতে তৈরি?’
নজরুল ইসলাম বলেন, মান চাইলে ৭৫ শতাংশ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দিতে হবে। আবার কিছু সরকারি মেডিকেল কলেজ আছে, একটি আলমারি—তা-ই অ্যানাটমি বিভাগ! তাই শুধু ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে নয়, সব বিষয় নিয়েই আলোচনা করতে হবে।

বিএসএমএমইউর সাবেক সহ–উপাচার্য অধ্যাপক রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে ভর্তি পরীক্ষা আমলাদের পরিবর্তে শিক্ষাবিদদের হাতে ছেড়ে দিতে পারে। দলীয় দাস নয়, দলীয় সেবক বা উপযুক্ত লোককে এ দায়িত্ব দেন।
তবে এবার ভর্তি পরীক্ষার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (স্বাস্থ্য শিক্ষা) এম এ রশিদ।
মূল প্রবন্ধে পড়েন বিএসএমএমইউর কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক রেজওয়ানুল হক।
ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি নাজমুন নাহারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন গতবারের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গঠিত গণতদন্ত কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, চিকিৎসক এখলাছুর রহমান, মুশতাক হোসেন, শুভাগত চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান, আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রকিবুল ইসলাম প্রমুখ।