গুলি করে শিবিরের হামলা ঠেকালেন অর্থমন্ত্রীর সাবেক এপিএস

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সাবেক এপিএস আ শ ম রাশেদের বাসা নগরের রায়নগর এলাকায়। বাসার সামনে তাঁদের বিপণিবিতান। সেখানেই একটি ব্যাংকের শাখা রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ব্যাংকে ভাঙচুর চালায় ও পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করেন ছাত্রশিবিরের একদল কর্মী। এরপরে তাঁরা রাশেদের বাসায় আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এ সময় পিস্তল দিয়ে গুলি করে হামলা ঠেকান অর্থমন্ত্রীর সাবেক এপিএস আ শ ম রাশেদ। এতে দুজন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে শিবির দাবি করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, সিলেটে আজ সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করেছিল ছাত্রশিবির। নগরের রায়নগর এলাকায় হরতালের পিকেটিংয়ে তত্পর ছিল শিবিরের একদল কর্মী। বেলা দেড়টার দিকে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের কার্যকারিতার বিরুদ্ধে রিভিউ আপিল খারিজের পর তাঁরা সহিংস হয়ে ওঠেন। শিবিরের কর্মীরা আ শ ম রাশেদের বাসার সামনে বিপণিবিতানে বেসিক ব্যাংকের শাখায় পেট্রলবোমা ছুড়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর পিকেটাররা তাঁর বাসার দিকে এগোতে থাকেন। এ সময় বাসায় থাকা রাশেদ ও তাঁর বড় ভাই ইরফান আহমদ দুটি পিস্তল নিয়ে বাসার উঠোনে দাঁড়িয়ে হামলাকারীদের উদ্দেশে গুলি ছোড়েন। তখন হামলাকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও কামরুল ও সায়েম নামের শিবিরের দুজন কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি দল সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আ শ ম রাশেদ জানান, হরতালের পিকেটিংয়ে থাকা শিবিরের ক্যাডাররা সশস্ত্র অবস্থায় তাঁদের মালিকানাধীন বিপণিবিতানের বেসিক ব্যাংকের শাখায় পেট্রলবোমা ছোড়ে ও ভাঙচুর চালায়। পরে বিপণিবিতানের পেছনে তাঁদের বাসার দিকে অগ্রসর হলে তাঁরা দুই ভাই লাইসেন্স করা পিস্তল থেকে গুলি করে হামলা ঠেকান। তাঁদের ছোড়া গুলিতে শিবিরের দুই কর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর তিনি পরে শুনেছেন বলে জানান।

গুলি করা প্রসঙ্গে রাশেদ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘অতর্কিতে হামলা হওয়ায় আমরা নিজেদের রক্ষা করতে পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়েছি। নতুবা হামলাকারীরা ব্যাংক লুটপাট করে বাসায়ও আগুন দিত।’

হামলা ঠেকাতে গুলি করা প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ আয়ুব প্রথম আলো ডটকমকে জানান, এ বিষয়ে পুলিশকে কেউ অবহিত করেনি, তবে লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে গুলি করা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। 

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের কথা জানিয়ে অতিরিক্ত উপকমিশনার বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা গুলিবর্ষণের আলামত পাইনি। সেখান থেকে শুধু পেট্রলবোমার কিছু আলামত ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে রেললাইনের পাথর ব্যবহার করায় সেগুলোর কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।’ হামলাকারী সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের একটি আদেশের পরপরই নগরের ওই এলাকা ছাড়াও আরেকটি ব্যাংকে একই কায়দায় পেট্রলবোমা হামলা হয়েছে। তাই আমরা হামলাকারীরা ওই পক্ষ হবে ধারণা করে শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।’

মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ছাত্রশিবিরের মহানগর শাখার সভাপতি আনোয়ারুল ওয়াদুদ ফোন ধরেননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর শাখার এক নেতা শিবিরের দুজন কর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ওই দুজনকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। প্রথম আলো ডটকমের কাছে শিবিরের ওই নেতা দাবি করেন, ‘হরতালে পিকেটিং করার সময় এপিএসের বাসা থেকে গুলি করা হয়। এতে সায়েম ও কামরুল গুলিবিদ্ধ হন। তবে ব্যাংকে হামলার কথা জানালেও কারও বাসায় হামলার কথা তিনি অস্বীকার করেন।