দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু নিয়ে আশাবাদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দ্রুতই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি কখনো একটু ভালো হয়, আবার কখনো একটু খারাপ হয়। এ পরিস্থিতি সব সময় বিরাজমান। আমরা আশা করি, এ পরিস্থিতি সব সময় থাকবে না। আমরা অতি দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে পারব।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ রোববার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। এর আগে সকালে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে।
পরে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্র নীতি হচ্ছে “সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়”। আমাদের সঙ্গে চীন, ভারত, রাশিয়ার যেমন অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক; আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও চমৎকার সম্পর্ক।’ তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা আমাদের দেশের জন্য বোঝা। মিয়ানমারে সব অধিকারসহ তাদের প্রত্যাবর্তন একমাত্র সমস্যার সমাধান।’ তিনি বলেন, ‘আমরা চীনের সহযোগিতা কামনা করেছি। চীন জানিয়েছে, তারা (চীন) মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করেছে। মিয়ানমারকে বলেছে, অন্তত বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাবর্তনটা শুরু করার জন্য।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, মিয়ানমার হয়তো খুব দ্রুত প্রত্যাবর্তন শুরু করবে।
রোহিঙ্গা ইস্যু যেন আন্তর্জাতিক মনোযোগ না হারায়
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। সেখানে তাদের মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ মহাসচিব চিঠিতে ও আমার সঙ্গে বৈঠকে আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, বিশ্ব মণ্ডলে বিভিন্ন জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন; সেগুলোর সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ মাঝেমধ্যে যে বিবৃতি দেয়, তা অসামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে—সেই বিষয়েও আমি আলোচনা করেছি।’ তিনি (আবাসিক সমন্বয়কারী) বলেছেন, এ বিষয়টি তিনি দেখবেন।
আম আমদানি করতে চায় চীন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন আমাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী। চীন থেকে তিসি আমদানি ও গম রপ্তানি করে বাংলাদেশ। চীন বাংলাদেশ থেকে পাট, চামড়া, মাংস, সামুদ্রিক খাদ্য ও মাছ আরও বেশি আমদানি করতে চায়। এর বাইরে তারা বাংলাদেশ থেকে আম আমদানি করতে চায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যেহেতু গম রপ্তানি করি এবং চীন আমাদের বড় একটা বাজার, এ জন্য শুল্কমুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনার মধ্যে আছি।’
নেপাল থেকে আরও বেশি জলবিদ্যুৎ আমদানি
হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘নেপাল আমাদের কাছের প্রতিবেশী। জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ ইস্যু নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। ইতিমধ্যে নেপালের সঙ্গে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করেছি। শুল্ক নিয়ে আমাদের মধ্যে দর-কষাকষি হচ্ছে। আমরা যেন আরও বেশি জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে পারি।’