গ্রাহকের সই জাল করে ৯৫ লাখ আত্মসাৎ করায় দুই ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ৫ জনের সাজা
চট্টগ্রামে গ্রাহকের ৯৫ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক দুই ব্যাংক কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুনসী আবদুল মজিদ এই রায় দেন।
দুদকের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমদে প্রথম আলোকে বলেন, নগরের ইস্টার্ণ ব্যাংক চান্দগাঁও শাখার সাবেক প্রায়োরিটি ব্যাংকিং ব্যবস্থাপক ইফতেখার কবিরকে ৩১ বছর কারাদণ্ড ও ৫২ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা, ব্যাংকের একই শাখার সাবেক প্রায়োরিটি ব্যাংকিং ব্যবস্থাপক সামিউল সাহেদ চৌধুরীকে ৬ বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া ইফতেখারের সহযোগী লাবিবা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী জাকির হোসেন ও মাহমুদ হাসানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও ২৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং জুলেখা ট্রেডিংয়ের আবদুল মাবুদকে ৬ বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
কাজী ছানোয়ার আহমেদ আরও বলেন, রায় ঘোষণার সময় পাঁচ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
আদালত সূত্র জানায়, আবু সাঈদ নামের এক গ্রাহককে স্থায়ী আমানত (এফডিআর) রাখার প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তাঁর কাছ থেকে কয়েকটি চেকে সই নিয়ে নেন ইস্টার্ণ ব্যাংকের চান্দগাঁও শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক ইফতেখার কবির। পরবর্তী সময়ে জাল সইয়ের মাধ্যমে অন্যান্য আসামির সহায়তায় আবু সাঈদের হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
আদালত সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার ফরমের মাধ্যমে আবু সাঈদের সই জাল করে ১৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। একই বছরের ২৬ অক্টোবর গ্রাহকের সই জাল করে অ্যাকাউন্ট পেয়ি চেকের মাধ্যমে স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট হোল্ডার মাহমুদুল হাসানের অ্যাকাউন্ট নম্বরে সাত লাখ টাকা প্রবেশ করানো হয়। এভাবে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে আবু সাঈদের হিসাব নম্বর থেকে ৯৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। পরে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বাদী হয়ে মামলা করে। তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ১১ মে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরু হয়। ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত এই রায় দেন।