ভুক্তভোগী অভিযোগ করেননি, পুলিশও ব্যবস্থা নেয়নি

ঘুষপ্রতীকী ছবি

চাকরি দেওয়ার কথা বলে নেওয়া ঘুষের টাকা ফেরতের ঘটনায় কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ভুক্তভোগীরা পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। পুলিশও নিজ উদ্যোগে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। যদিও দণ্ডবিধির ১৬১ ও ১৬২ ধারা অনুযায়ী, ঘুষ নেওয়া ও দেওয়া দুটোই অপরাধ।

ঘুষ দেওয়া হয়েছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে চাকরি পেতে। টাকা দিয়েছিলেন ৭ ব্যক্তি, পরিমাণ মোট সাড়ে ৯ লাখ টাকা। অভিযোগ উঠেছে, চাকরি না পেয়ে সেই টাকা ফেরত চাইতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের বাসায় গিয়ে গত বৃহস্পতিবার হামলার শিকার হন আবু সুফিয়ান নামের এক ব্যক্তি।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষায় জালিয়াতি ও অনিয়মের বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে।

সুফিয়ান দাবি করেন, তাঁর মাধ্যমে সাত ব্যক্তি টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকা রোববার ফেরত পেয়েছেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) রমনা ‘মধ্যস্থতা’ করেছে। এ সময় প্রতিমন্ত্রীর এক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

সুফিয়ান আরও দাবি করেন, কয়েক মাস আগে তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের ঢাকার মিন্টো রোডের বাসায় যান। তখন প্রতিমন্ত্রী তাঁর গাড়িচালক মো. মমিন ও ভাতিজা মো. লিটনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে তাঁদের কাছে ৭ জন প্রার্থীর চাকরির জন্য সাড়ে ৯ লাখ টাকা দেন।

সুফিয়ানের ভাষ্য, বৃহস্পতিবার টাকা ফেরত চাইতে দুই চাকরিপ্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি প্রতিমন্ত্রীর বাসায় যান। টাকা ফেরত চাইলে তাঁদের ওপর হামলা হয়। তখন প্রতিমন্ত্রীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য। এবার তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। তিনি রোববার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর নির্বাচনী এলাকার কয়েক ব্যক্তি টাকা নিয়েছিলেন। সেটা তিনি জানতেন না। জানতে পেরে সবার টাকা ফিরিয়ে দিতে একজনকে দায়িত্ব দেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার ফজলে এলাহী টাকা ফেরত দেওয়ার মধ্যস্থতা করেন। বিষয়টি নিয়ে জানতে গত দুই দিন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ডিবির অন্য কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাননি।

ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান আজ সোমবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ঘুষের টাকা ফেরতের মধ্যস্থতা করা পুলিশের কাজ নয়। বিষয়টি নিয়ে তিনি ডিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানাবেন। পরে তিনি বলেন, ডিবিতে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাঁকে জানিয়েছেন।