রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদামে আগুনের ঘটনায় উদ্ধারকাজ তত দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু মেয়ে মার্জিয়া সুলতানাকে জীবিত অথবা মৃত খুঁজে পাচ্ছিলেন না মোহাম্মদ সুলতান। শেষে একটি শ্রমিক সংগঠনের সহায়তা নিয়ে ঢুকে যান পোড়া কারখানায়।
১১ দিন পর ঘটনাস্থলে খুঁজে পান মেয়ের পচা-গলা-পোড়া লাশ। এরপর ডিএনএ পরীক্ষা এবং সেটার ফলাফল পেতে দীর্ঘ অপেক্ষা। শেষমেশ গত ২৬ নভেম্বর সুনামগঞ্জে মেয়ের লাশ দাফন করেছেন। ক্ষুব্ধ-হতাশ বাবার এখন একটাই প্রশ্ন—‘মেয়ে মরল, লাশ পাইলাম, এখন ক্ষতিপূরণ পামু তো?’
ঘটনাটি ঘটে গত ১৪ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। শিয়ালবাড়ির ৩ নম্বর সড়কের আলম ট্রেডার্স নামের একটি রাসায়নিক গুদামে প্রথমে আগুন লাগে। আগুন গুদামের পাশের আর এন ফ্যাশন নামে পোশাক কারখানায়ও ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় শুরুতে ১৬ জনের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। ১১ দিন পর মার্জিয়ার লাশ উদ্ধার করা হলে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭।
মার্জিয়ার লাশ উদ্ধারের সময়কার একটি ছোট্ট ভিডিও তাঁর পরিবারের কাছে আছে। তাতে দেখা যায়, পোড়া ও খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশের ব্যাগে তোলা হচ্ছে। আশপাশে আর কিছু আছে কি না—খুঁজতে গিয়ে একজন বলে উঠলেন, ‘এই যে চামড়া আছে।’ একটু পর আরেকজন হাতের হাড়ের খণ্ডিত অংশ খুঁজে পান। এত খোঁজাখুঁজি আর মেয়ের লাশ উদ্ধারের পুরোটাই সামনে থেকে দেখেন মোহাম্মদ সুলতান।
নিহত হন মার্জিয়ার স্বামীও
মার্জিয়ার বয়স মাত্র ১৪ বছর। স্বামী জয় মিয়ার বয়স ২০ বছর। মাস ছয়েক আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। মার্জিয়ার বাবা মোহাম্মদ সুলতান ও জয়ের বাবা সবুজ মিয়া আপন দুই ভাই। বাড়ি নেত্রকোনায়।
মোহাম্মদ সুলতান নেত্রকোনা থেকে সুনামগঞ্জে গিয়ে থিতু হন। পরে পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। তিনি সিটি করপোরেশনের ময়লা পরিবহনের কাজ করেন। সবুজ মিয়া গাজীপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। কাজ করেন একটি পোশাক কারখানায়।
জয় ও মার্জিয়া ঢাকায় আর এন ফ্যাশনে কাজ করতেন। অগ্নিকাণ্ডের সপ্তাহখানেক আগে দুজন সেখানে কাজ নেন। জয় অপারেটর, আর মার্জিয়া হেলপার পদে। কারখানার তিনতলায় কাজ করতেন দুজনে। আগুনের ঘটনায় জয় পুড়ে মারা গেছেন। তাঁর লাশ আগেই পাওয়া গেছে।
জয় ও মার্জিয়া ঢাকায় আর এন ফ্যাশনে কাজ করতেন। অগ্নিকাণ্ডের সপ্তাহখানেক আগে দুজন সেখানে কাজ নেন। জয় অপারেটর, আর মার্জিয়া হেলপার পদে। কারখানার তিনতলায় কাজ করতেন দুজনে। আগুনের ঘটনায় জয় পুড়ে মারা গেছেন। তাঁর লাশ অগ্নিকাণ্ডের পরপরই পাওয়া যায়।
একই পোশাক কারখানায় কাজ করতেন মার্জিয়ার আপন ভাই মো. হোসাইন। তিনিও দগ্ধ হন। তবে তাঁকে কারখানা থেকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল।
বাবার অপেক্ষা শেষ হয় না
ঘটনার দিন ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টার চেষ্টায় পোশাক কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আর রাসায়নিক গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে ২৭ ঘণ্টা পর। ডিএনএ পরীক্ষা শেষে পুড়ে মারা যাওয়া ১৬ জনের লাশ ১৯ অক্টোবর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২১ অক্টোবর ফায়ার সার্ভিস রূপনগর পুলিশের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে উদ্ধার অভিযান আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ করে।
মার্জিয়ার লাশ উদ্ধারের সময়কার একটি ছোট্ট ভিডিও তাঁর পরিবারের কাছে আছে। সেটায় দেখা যায়, খুঁজতে গিয়ে একজন বলে উঠলেন, ‘এই যে চামড়া আছে।’ একটু পর আরেকজন হাতের হাড়ের খণ্ডিত অংশ খুঁজে পান। এ খোঁজাখুঁজি আর মেয়ের লাশ উদ্ধারের পুরোটাই সামনে থেকে দেখেন বাবা মোহাম্মদ সুলতান।
তখনো মোহাম্মদ সুলতান বলেই যাচ্ছেন, ঘটনার দিন তাঁর মেয়ে এ কারখানায় কাজ করতে গিয়েছিল। কিন্তু মেয়ের সন্ধান এখনো পাননি তিনি। আগুন লাগার পরও মেয়ের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়েছে। কিন্তু খুঁজে পাওয়া ১৬ জনের লাশের মধ্যে তাঁর মেয়ে নেই। জীবিতও পাওয়া যায়নি। তাহলে তাঁর মেয়ে কোথায়?
এরই মধ্যে মোহাম্মদ সুলতান ও তাঁর স্ত্রী ইয়াসমিন বেগম মেয়ে ও জামাতার ছবি হাতে মর্গসহ বিভিন্ন জায়গায় খুঁজে দেখেছেন। সেই ছবি প্রথম আলোয় ছাপাও হয়েছে। কিন্তু মেয়ের হদিস পাননি।
দোতলায় কিছু পাইনি। তিনতলায় একটি বড় লোহার টেবিলের নিচে থেকে আসা পচা গন্ধ নাকে লাগে। সেখানে কাপড়ের স্তূপের মধ্য থেকে পুড়ে যাওয়া লাশটা পেলাম। লাশের পাশে এক হাতের হাড়ও পাই। অথচ ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান বন্ধ করে দিয়েছিল।
তখনই মোহাম্মদ সুলতান প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, আগুন লাগার খবর শুনে প্রথমে তিনি ফোন করেন জামাই জয়কে। কিন্তু ফোন ধরেননি। পরে মেয়েকে ফোন করেন। সুলতান বলেছিলেন, ‘মেয়েরে জিগাইলাম, আম্মু তুমি কই? আগুন নাকি লাগসে?’ মেয়ে কানতে কানতে কইল, ‘আগুন লাগসে অফিসে। বের হতে পারছি না। অনেক ধোঁয়া আর অন্ধকার। বের হওয়ার পথ পাচ্ছি না।’
নিজেদেরই খুঁজে দেখার উদ্যোগ
মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শবনম হাফিজের সঙ্গে দেখা হয় মোহাম্মদ সুলতানের। তখন তাঁরা নিজেরাই খুঁজে দেখার উদ্যোগ নেন। সহায়তা চান পুলিশেরও। মেয়ের লাশ দাফনের পর যখন মোহাম্মদ সুলতানের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়, তখন তিনি বলেন, ‘ওই আপা না থাকলে মেয়ের লাশটাও পাইতাম না।’
মামলাটির তদন্ত চলছে। মূল আসামি শাহ আলম হাইকোর্টের আদেশে জামিনে আছেন। অন্যরা পলাতক। তাঁদের ধরার চেষ্টা চলছে।
কথা হয় শবনম হাফিজের সঙ্গেও। তিনি জানান, ২২ অক্টোবর মার্জিয়ার বাবার সঙ্গে প্রথম কথা হয়। এরপর রূপনগর থানায় যোগাযোগ করা হয়। সব প্রক্রিয়া শেষে ২৬ অক্টোবর বিকেলে পোড়া কারখানায় তল্লাশি চালান তাঁরা। তবে এর আগে থানায় লিখিত দিতে হয় যে তল্লাশিকাজে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হলে সেই দায় শবনম হাফিজ বা তাঁর সংগঠনকেই নিতে হবে।
মার্জিয়াকে খুঁজতে শবনম হাফিজ নিজেও পোড়া কারখানায় ঢুকেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন মার্জিয়ার পরিবারের সদস্য, স্থানীয় নেতাসহ মোট ১০ জনের একটি দল। চারপাশ অন্ধকার থাকায় মুঠোফোনের টর্চের আলো জ্বেলে তাঁদের কাজ করতে হয়।
তিনতলায় পাওয়া যায় লাশ
শবনম হাফিজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দোতলায় কিছু পাইনি। তিনতলায় একটি বড় লোহার টেবিলের নিচে থেকে আসা পচা গন্ধ নাকে লাগে। সেখানে কাপড়ের স্তূপের মধ্য থেকে পুড়ে যাওয়া লাশটা পেলাম। লাশের পাশে এক হাতের হাড়ও পাই। অথচ ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান বন্ধ করে দিয়েছিল। সেদিনও ফায়ার সার্ভিসের কেউ উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে থানা-পুলিশের সদস্যরা লাশ উদ্ধারে সহায়তা করেন।’
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) তাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুর্ঘটনা ঘটে ১৪ অক্টোবর। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যৌথ অনুসন্ধান শেষ করে ২১ অক্টোবর ঘটনাস্থল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বুঝিয়ে দিয়ে আমরা প্রত্যাবর্তন করি। পরে ভিকটিম উদ্ধারের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণ বলতে পারবেন।’
শবনম হাফিজ বলেন, ‘এরপর শুরু হয় মার্জিয়ার ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ার অপেক্ষা। ১৪ অক্টোবর ঘটনার দিনই মার্জিয়ার বাবার ডিএনএ স্যাম্পল নেওয়া হয়েছিল। মার্জিয়ার লাশ উদ্ধারের পর স্যাম্পল দেওয়া হয়। এ পরীক্ষায়ও দীর্ঘ সময় লেগে যায়। লাশ উদ্ধারের ২০ দিন পর সরাসরি ল্যাবের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলতে হয়। অবশেষে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যায়। সেটা মার্জিয়ারই লাশ ছিল।’
নিহত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা করার একমাত্র সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ‘ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি’। এ পরীক্ষাগারের ডেপুটি চিফ ডিএনএ অ্যানালিস্ট আহমাদ ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার দুই সপ্তাহ পর। পচে পোকা ধরে গিয়েছিল। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সফট টিস্যু পাওয়া যায়নি। হার্ড টিস্যু দিয়ে কয়েকবার পরীক্ষা করতে হয়েছে। বাবার পাশাপাশি মায়ের স্যাম্পলও নিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে সময় একটু বেশি লেগেছে। এখানে অবহেলার কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
অনেকেই বলছিলেন, মার্জিয়ার বাবা ক্ষতিপূরণের টাকার লোভে মেয়েকে নিখোঁজ বলছেন। তবে মার্জিয়ার জুতা পাওয়া যায় আগুন লাগা কারখানার ভেতরে। অন্যান্য তথ্য ঘেঁটেও সত্য বলেই মনে হয়েছিল। তাই লাশ খোঁজার উদ্যোগ নেন বলে জানান শবনম হাফিজ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে মার্জিয়ার লাশ উদ্ধার করতে হয়েছে। লাশ পাওয়া না গেলে, এর পুরো দায় আমার সংগঠনকেই নিতে হতো।’
এখন ক্ষতিপূরণের দাবি
কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় কোনো শ্রমিক মারা গেলে সরকারের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় অনেক সময় লেগে যায়। মেয়ের লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরবেন, সেই টাকাটাও ছিল না মোহাম্মদ সুলতানের কাছে। শবনম হাফিজ বলেন, তাঁর সংগঠনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে বিভিন্নজনের কাছে টাকা সংগ্রহ করা হয়। এরপর মার্জিয়ার লাশ সুনামগঞ্জে পাঠানো হয়।
গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন গত ১০ নভেম্বর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদপ্তরের মহাপরিদর্শকের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে। স্মারকলিপির অনুলিপি শ্রম ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকেও দেওয়া হয়েছে। এতে মার্জিয়ার লাশ উদ্ধারের ঘটনাটিকে শ্রমিকদের প্রতি ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের দায়িত্বের চরম অবহেলার শামিল’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ১৪ অক্টোবর ঘটনা ঘটার পর একজন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন, জানার পরও কেন শ্রমিক পরিবারের প্রতি এ অবহেলা করা হলো? স্মারকলিপিতে নিহতদের পরিবারকে ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন, আগুনের ঘটনার দিন আশপাশের বিভিন্ন কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে আসলেই কতজন শ্রমিক কাজ করতে গিয়েছিলেন, তার তালিকা তৈরিসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়েছে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের পরিবারগুলোকে আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
মার্জিয়ার স্বামী জয়ের বাবা সবুজ মিয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে ছেলের লাশ পান। ডিএনএ পরীক্ষার পর ১৯ অক্টোবর ছেলের লাশ হস্তান্তর করা হয়। দাফনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা পেয়েছেন। এর বাইরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি এক লাখ করে টাকা দিয়েছে।
মূল আসামি জামিনে, বাকিরা পলাতক
আগুনের ঘটনায় নিহত পোশাকশ্রমিক ছানোয়ার হোসেনের ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৫ অক্টোবর রাসায়নিক গুদামের মালিক শাহ আলমসহ আটজনের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে রূপনগর থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়।
রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। মূল আসামি শাহ আলম হাইকোর্টের আদেশে জামিনে আছেন। অন্যরা পলাতক। তাঁদের ধরার চেষ্টা চলছে।
আগুনের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে মোরশেদ আলম বলেন, এ বিষয়টিতে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। তাঁদের কাছে কোনো নির্দেশনা নেই।
কথা হয় মামলার বাদী সাইফুল ইসলামের সঙ্গেও। তিনি তাঁর ২৫ বছর বয়সী ভাইকে হারিয়েছেন। রংমিস্ত্রি সাইফুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুধু আমার ভাই তো না; কতগুলো পরিবারের কারও ছেলে, কারও মেয়ে, কারও ভাই, কারও বোন মারা গেছে। মালিক একবারের জন্যও বলে নাই—আমি আপনাদের পাশে আছি। আগুন লাগার পর কারখানা থেকে বেঁচে বের হওয়ার কোনো উপায় ছিল না। নিচের গেট লাগায় দেয় কেউ। লাশগুলো চেনারও উপায় ছিল না।’
সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি জানিয়ে সাইফুল এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আর কোনো কারখানায় যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।