যুবদলের বর্তমান, সাবেক সভাপতিসহ ৩১ জনের সাজা

আদালতের রায়প্রতীকী ছবি

আরও একটি মামলায় জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন, একই সংগঠনের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়ার সাজা হয়েছে। গাড়ি ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ও বেআইনি সমাবেশ করার অভিযোগে রাজধনীর শাহজাহানপুর থানায় ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছর আগে মামলাটি হয়েছিল। পাঁচ বছর পর আরেকটি জাতীয় নির্বাচনের মাত্র এক মাসে আগে এ মামলার রায় হলো।

রায়ে বিএনপির সহযোগী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ এই ৩ নেতাসহ ২০ জনকে ৩ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।

সাজা হওয়া আসামিদের মধ্যে মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলমও রয়েছেন। অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে আগে থেকেই তিনি কারাগারে আছেন। কারাগারে আছেন যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলমও। আর সুলতান সালাউদ্দিনসহ অন্যদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

ঢাকার আদালত গতকাল আরও দুটি মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ১১ নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ নিয়ে গত সাড়ে ৩ মাসে ৫৫ মামলায় বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর অন্তত ৮৪৫ নেতা-কর্মীর সাজা হয়েছে। এর মধ্যে সুলতান, সাইফুল ও কাদেরের সাজা হয়েছে একাধিক মামলায়।

শাহজাহানপুর থানার মামলা
পুলিশের করা মামলার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ১৪ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে শাহজাহানপুর রেলগেট থেকে ৭০ থেকে ৮০ জন যুবক বেআইনিভাবে জোটবদ্ধ হয়ে শাহজাহানপুরে মির্জা আব্বাসের বাসার দিকে আসেন। তাঁরা সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে দিতে একপর্যায়ে গাড়ি ভাঙচুর করেন এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। এ ঘটনায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে পুলিশ মামলা করে। ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর ৬৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। গত বছরের ২৫ আগস্ট ২৫ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলার ১২ সাক্ষীর মধ্যে ৪ জনকে আদালতে হাজির করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য। গত ৩০ অক্টোবর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়, শেষ হয় ২০ নভেম্বর।

আদালত রায়ে ২০ জনকে ৩ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন, খালাস পেয়েছেন ৪৪ জন।

গুলশান ও সূত্রাপুর থানার মামলা
মামলার এজাহারের বিবরণ অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গুলশানের শাহজাদপুর এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা বেআইনিভাবে জড়ো হয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। এ সময় তাঁরা সড়কে যানবহন ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় করা মামলায় গুলশানের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী বাপ্পীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২২ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে চারজন পুলিশ সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।

এ মামলায় ৯ নেতা-কর্মীকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। খালাস পেয়েছেন একজন। ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন এ রায় দেন।

এ ছাড়া ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সূত্রাপুর থানায় করা এক মামলায় দুজনকে তিন বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় পুলিশের কাজে বাধা ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের ১৪ সাক্ষীর মধ্যে ২ জন পুলিশ সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়। ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরী মামলার রায়ে দুজনকে কারাদণ্ড ও চারজনকে খালাস দিয়েছেন।