ড. ইউনূসকে জিজ্ঞাসাবাদ: তদন্তে ব্যক্তিপরিচয় দেখার সুযোগ নেই বললেন দুদক সচিব
গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা ও জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন অনুযায়ী কাজ করে এখানে ব্যক্তিপরিচয় দেখার কোনো সুযোগ নেই।
ড. ইউনুস একজন নোবেল বিজয়ী ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব, তাঁর এই ব্যক্তিপরিচয় এই মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব এ কথা বলেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যালয়ে যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তিনিসহ গ্রামীণ টেলিকমের তিন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের পর দুদক সচিব এক লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিকদের বলেন, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন একটি অভিযোগ দাখিল করে। অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশ অর্থ লোপাট, তাদের পাওনা ৩৬৪ কোটি ১৭ লাখ ৯ হাজার ১৪৬ টাকা পরিশোধকালে অবৈধভাবে অ্যাডভোকেট ফি ও অন্যান্য ফির নামে ৬ শতাংশ অর্থ কর্তন করা হয়।
এ ছাড়া কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দকৃত সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ এবং কোম্পানি হতে ২ হাজার ৯৭৭ (দুই হাজার নয় শ সাতাত্তর) কোটি টাকা মানি লন্ডারিং এর মাধ্যমে অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের অভিযোগ করা হয়।
দুদক সচিব বলেন, এসব অভিযোগ অনুসন্ধান করার জন্য দুদক একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করে। অনুসন্ধান টিম অনুসন্ধান শেষে অভিযোগটির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় দুদকে মামলা রুজুর সুপারিশ করে একটি অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করে। এই প্রতিবেদন কমিশনে উপস্থাপিত হলে মামলার অনুমোদন দিলে দুদক মামলা করে। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত চলমান রয়েছে। তাই দুদক কর্তৃক হয়রানির অভিযোগ সঠিক নয়। এই মামলায় গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত সাতজনের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব আরও বলেন, ন্যায়বিচারের স্বার্থে ওনার যে অবস্থান সেটা জানার জন্য এখানে ডাকা হয়েছে। এই মামলা দুদক করেনি, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিকেরা কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরে যে অভিযোগ করেছিলেন, তারা সেটির সত্যতা পেয়েছে। সেই অভিযোগটি দুদকের তফসিলভুক্ত হওয়ায় নিয়ম মেনেই মামলাটি করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে এই মামলায় আসামিদের মধ্যে একজন জামিনে আছে। বাকিদের বিষয়ে আমার কাছে হালনাগাদ তথ্য নেই।’
যে অভিযোগে মামলা হয়েছে তার কোনো সত্যতা পাওয়া গেছে কি না, সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত শেষ না হওয়ার আগে কোনোভাবেই জানার সুযোগ নেই, এটি কী পর্যায়ে আছে।