শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে: নুজহাত চৌধুরী

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শহীদ বুদ্ধিজীবী কন্যা নুজহাত চৌধুরী
ছবি: প্রথম আলো

শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. আলীম চৌধুরীর কন্যা নুজহাত চৌধুরী বলেছেন, শিক্ষকেরা যখন শ্রেণিকক্ষে পড়াবেন তখন তাঁদের এটা মনে রাখতে হবে যে, তাঁদের দিকে তাকিয়ে আছেন মুনীর চৌধুরীরা। শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পৌঁছে দিতে হবে।

১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শহীদ বুদ্ধিজীবী কন্যা নুজহাত চৌধুরী এসব কথা বলেন।

নুজহাত চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া জরুরি। দেশের গৌরবের ইতিহাস জেনে তারাই পরবর্তী প্রজন্মকে জানাবে। জয় বাংলার বিপরীতে স্লোগান, জাতির পিতাকে অন্ধকারে রাখার চেষ্টা, বুদ্ধিজীবীদের অবদান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখলে শহীদ পরিবারের সন্তান হিসেবে কষ্ট লাগে। যুদ্ধাপরাধীরা ৩০ লাখ শহীদ নয়, তিন লাখ শহীদ বললে খুশি হয়। যেন তাঁদের অপরাধ কম বোঝায়। যেখানে একটি হত্যাকাণ্ডকেও গণহত্যা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমরা দেখেছি খালেদা জিয়া নিজেই এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। যুদ্ধাপরাধীদের হাতে দেশের পতাকা আর মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী কন্যা নুজহাত চৌধুরী বলেন, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু কোনো রাজনৈতিক স্লোগান নয়। এটা সবার স্লোগান। এটাকে অস্বীকার করে বাংলাদেশের রাজনীতি হতে পারে না। পৃথিবীর আর কোথাও এমন নেই। যেখানে নিজেদের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। আর আমরা কেন এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে হবে, এসব কেন শুধু আওয়ামী লীগ সরকারই করবে। এসব অপরাধীদের পক্ষে কেন বিএনপি দাঁড়াবে। জামায়াতের নতুন রূপ নিয়ে এবি পার্টি, ডেভেলপমেন্ট পার্টি গঠন করা হয়েছে। এসব দল কিভাবে রাজনীতি করে আর নিবন্ধন চায়? তারা খোলস বদলালেও নিজের রূপ বদলাতে পারবে না।

নুজহাত চৌধুরী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কেনো রাজনীতির বিষয় হবে? বাঙালি তার নিজের আত্মপরিচয় নিয়ে আকাশ সমান গর্ব নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। কেন তারা আত্মপরিচয় সংকটে ভুগবে? মুক্তিযুদ্ধ ও আত্মত্যাগের ইতিহাস মনে রাখতে হবে তাদের। যতদিন বাংলাদেশ আছে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ থাকবে।

সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, শিক্ষক হিসেবে শ্রেণিকক্ষে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনাতে হবে আমাদের। সঠিক ইতিহাস প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার মো. ওহিদুজ্জামান। এতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশ নেন।