চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এবার প্রতিবাদ সমাবেশ

প্রশাসনিক ভবনের সামনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির প্রতিবাদ সমাবেশ। চট্টগ্রাম, ১২ ফেব্রুয়ারিছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার ও সহ-উপাচার্য বেনু কুমার দের পদত্যাগের দাবিতে এবার প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে শিক্ষক সমিতি। গতকাল সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়মের সংবাদ প্রদর্শনীর কর্মসূচি শুরু হয়েছিল গত ২৩ জানুয়ারি। ওইদিন কর্মসূচি পালনে প্রশাসন বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিল সমিতি। এরপর থেকেই সমিতির কর্মসূচি চলছে।

সমিতির নেতাদের অভিযোগ গত বুধবার রাতে কর্মসূচির স্থাপনা (প্যান্ডেল) ক্ষতিগ্রস্থ করেছে প্রশাসন। সমিতির আন্দোলন বানচাল করতেই এমনটা করা হয়েছে।

প্রতিবাদ সমাবেশে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক বলেন, গত সপ্তাহে তাঁরা কর্মবিরতি পালন করেছেন। পরে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে তাঁরা এ কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। যতদিন পর্যন্ত উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য তাঁদের পদ থেকে সরে না দাঁড়াবেন ততদিন পর্যন্ত তাঁরা বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত করে শিক্ষকদের এই যৌক্তিক আন্দোলন থামানো যাবে না।

সমিতির কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মদ আলী আরশাদ চৌধুরী বলেন, প্রশাসন সংবাদ প্রদর্শনীর প্যান্ডেল ভয় পাচ্ছে। কারণ প্রশাসনের অনিয়ম ও দূর্নীতির চিত্র এখানে প্রচার হচ্ছে। তাই প্রশাসন এটি নষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছে।

রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক বখতেয়ার উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা প্রশাসনিক ভবন। কারণ এতে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের কার্যালয় রয়েছে। কিন্তু এই ভবনের সামনেই কোনো স্থাপনা নিরাপদ নয়। এতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অনুমান করা যায়।

সমাবেশে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হকের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী, সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ অহিদুল আলম, সংগীত বিভাগের শিক্ষক এ কে এম কৌশিক আহমেদ প্রমুখ।

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর উপাচার্যের বিরুদ্ধে অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করে বাংলা ও আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ এনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিল শিক্ষক সমিতি। সমিতির এ অবস্থানের মধ্যেই আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেন উপাচার্য শিরীণ আখতার। এর প্রতিবাদে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে পদত্যাগের এক দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষক সমিতি।

ইতিমধ্যে প্রতীকী অনশন, অবস্থান কর্মসূচি, গণসংযোগ, উপাচার্যের বিরুদ্ধে হওয়া অনিয়মের সংবাদ প্রদর্শন ও কর্মবিরতি পালন করেছে শিক্ষক সমিতি। যদিও উপাচার্য শিরীণ আখতার গত বছরের ২১ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি। আইন মেনেই তিনি নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

তবে গত ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধি লঙ্ঘন করা হচ্ছে জানিয়ে বাংলা ও আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়া স্থগিত করার অনুরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। পরে এসব ঘটনা তদন্ত করতে ৩১ জানুয়ারি তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করে কমিশন।