শেষ হলো উদীচীর গণসংগীত উৎসব

উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত গণসংগীত উৎসবে সংগীত পরিবেশন করেন পশ্চিমবঙ্গের তিন গণসংগীতশিল্পী কংকন ভট্টাচার্য, মন্দিরা ভট্টাচার্য, রঞ্জিনী ভট্টাচার্য। রোববার সন্ধ্যায় ছায়ানট মিলনায়তনে
ছবি: দীপু মালাকার

অতিথি শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে গণসংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর তিন দিনের গণসংগীত উৎসব। রাজধানীর ছায়ানট মিলনায়তনে রোববার সন্ধ্যায় এই সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ভারতের গণসংগীতশিল্পী কংকন ভট্টাচার্য, মন্দিরা ভট্টাচার্য ও রঞ্জিনী ভট্টাচার্য বেশ কয়েকটি সংগীত পরিবেশন করেন। আয়োজনের শুরুতে তাঁদের উত্তরীয় পরিয়ে এবং মানপত্র পাঠ করে বরণ করেন উদীচীর সভাপতি বদিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।

তিন শিল্পীর কণ্ঠে উঠে আসে সন্তোষ কর্মকার, নিবারণ পণ্ডিত, দুর্গা মণ্ডল, রত্না ভট্টাচার্য ও চিলির ভিক্টর জারার লেখা গণসংগীত। ‘গাছের ডালে শুক–সারি কথা বলে’ গান দিয়ে শুরু হয় পরিবেশনা। এরপর একে একে ‘ফারিস্তা হয়ে যায় সুলেমান শেখ’, ‘বুকের অতল তল’ আর ‘সেই কৃষ্ণচূড়া গাছটি’র মতো ১৭টি গান গেয়ে বাংলাদেশের শ্রোতাদের শুনিয়েছেন তাঁরা।

গানের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গণসংগীত সৃষ্টির উদাহরণ তুলে ধরেন শিল্পী কংকন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক নেতা বা গণমাধ্যম কখনো ইতিহাস তৈরি করে না। ইতিহাস তৈরি করে মানুষ।

‘প্রলয় বাজাও গানে, সাহস জাগাও প্রাণে’ স্লোগান নিয়ে ১০ মার্চ শুরু হয় উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত একাদশ সত্যেন সেন গণসংগীত উৎসব ও জাতীয় গণসংগীত প্রতিযোগিতা। সেদিন গণসংগীত প্রতিযোগিতা, আলোচনা অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতায় অংশ নেন দেশের ৫৮ জেলার শিল্পীরা।

রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে উৎসবের উদ্বোধন করেন উদীচীর অন্যতম উপদেষ্টা ও লোকসংগীতশিল্পী সাইদুর রহমান বয়াতি। প্রথম দিনের আলোচনা পর্বে বক্তারা বলেন, নিঃস্বার্থভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো মানুষের সংখ্যা কমছে। এর মধ্যে উদীচী সেই সংগঠন যারা মানুষের জন্য ভাবে। অন্ধকারে আলোর মিছিল উদীচী।

দ্বিতীয় দিন ১১ মার্চ বিকেলে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। গণসংগীতের প্রচার এবং একে স্বতন্ত্র সংগীতের ধারা হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে প্রতিবছর উদীচীর প্রতিষ্ঠাতা সত্যেন সেনের জন্মদিন ২৮ মার্চ কেন্দ্র করে আয়োজিত হয় এই গণসংগীত উৎসব।