জুয়ার সাইট-অ্যাপ ও জড়িতদের খুঁজতে কমিটি গঠনের নির্দেশ

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

বিজ্ঞাপন প্রচারসহ অনলাইনে জুয়া/বেটিংয়ের ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন চিহ্নিত করা, এগুলোর কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হয়, তা নির্ণয় এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তদন্ত করে ৯০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন।

‘অনলাইন জুয়ার প্রচারণায় তারকারা’ শিরোনামে ৯ এপ্রিল প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে অনলাইন জুয়া/বেটিং গেমস এবং সামাজিক ও মূলধারার মাধ্যমে তারকাদের এসব বিজ্ঞাপন প্রচারের বিস্তার রোধে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে তানজিম রাফিদ নামে রাজধানীর এক বাসিন্দা ১৬ এপ্রিল রিটটি করেন। আজ রিটের ওপর শুনানি হয়।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহিন এম রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী।

পরে আইনজীবী মাহিন এম রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধানকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে। হাইকোর্ট সাত বিবাদীর একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে; কমিটি বিশেষজ্ঞদের মতামতও নিতে পারবেন। বিজ্ঞাপন প্রচারসহ অনলাইনে জুয়া/বেটিংয়ের ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন চিহ্নিত করা, এগুলো কীভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং এগুলোর সঙ্গে কারা জড়িত, তা তদন্ত কমিটিকে খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে। আদালতে ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।’

সাকিব–বুবলী–পিয়াসহ তারকাদের অনলাইন জুয়ার অবাধ প্রচারণা
আরও পড়ুন

সাত বিবাদীকে সাতজন প্রতিনিধি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কোন কোন ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন অনলাইনে জুয়া/বেটিং হয়, তা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে তদন্ত কমিটিকে।’

সংবিধানে ১৮(২) ও ৩১ অনুচ্ছেদ, সংশ্লিষ্ট আইনের বিধিবিধান লঙ্ঘন করে কোনো সামাজিক ও মূল ধারার মাধ্যমের প্লাটফর্মে জনপ্রিয় তারকাদের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার এবং অনলাইন জুয়া/বেটিং গেমের কার্যক্রম ও বিস্তার রোধে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এ ধরনের অনলাইন জুয়া/বেটিং গেমের বিজ্ঞাপন প্রচারের বিস্তার বন্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

আরও পড়ুন

প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের অন্যতম শোবিজ তারকা ও মডেল পিয়া জান্নাতুল। তিনি আইন পেশায়ও আছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি বেশ জনপ্রিয়। ফেসবুকে তাঁর অনুসারীসংখ্যা ১৭ লাখ। ইনস্টাগ্রামে ১১ লাখ। পিয়া নিজের মডেলিং–জীবনের পাশাপাশি নানা সময় সামাজিক ও আইনি পরামর্শমূলক পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেন। তবে তাঁকে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপনের প্রচারণা চালাতেও দেখা গেছে। গত ১ জানুয়ারি থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি ১২টি অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপনের প্রচারণা চালিয়েছেন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে। শুধু পিয়া নন, চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী, অভিনয়শিল্পী সামিরা খান মাহিও অনলাইন জুয়ার প্রচারণা চালিয়েছেন। দেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও আছেন এই তালিকায়।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন