চিকিৎসার জন্য ভারতে সম্রাট, দুদকের আবেদন শুনানি মুলতবি

ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট
ফাইল ছবি

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট চিকিৎসার জন্য ১৫ জুলাই ভারতের কলকাতা গেছেন এবং ২৫ জুলাই তাঁর দেশে ফেরার কথা।

ইসমাইল হোসেনকে বিদেশ যেতে অনুমতি দিয়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনের শুনানিতে আজ রোববার হাইকোর্টকে এ তথ্য জানান তাঁর আইনজীবী। শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বিষয়টি আগামী ১ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) রাখেন।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার আসামি ইসমাইল হোসেন চৌধুরীকে গত ১ জুন চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬। আদালতে রক্ষিত তাঁর পাসপোর্ট দুই মাসের জন্য সম্রাটের জিম্মায় দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। দুই মাস পর তাঁর পাসপোর্ট আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাসপোর্টে ভিসা নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এক মাসের জন্য বিদেশে চিকিৎসার জন্য অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়। আসামি ইসমাইল হোসেন চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার তারিখ থেকে সর্বোচ্চ এক মাস সেখানে অবস্থান করতে পারবেন।

ইসমাইলকে বিদেশ যেতে অনুমতির বিচারিক আদালতের ওই আদেশ বাতিল চেয়ে সম্প্রতি হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। ইসমাইলের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। শুনানি নিয়ে আদালত ১ আগস্ট পর্যন্ত বিষয়টি মুলতবি রাখেন।

ওই মামলায় ২০২২ সালের ২২ আগস্ট জামিন পেয়ে কারামুক্ত হন সম্রাট। এর আগে তিনি আরও তিনটি মামলায় জামিন পান। এগুলো মাদক, অর্থ পাচার ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা।

অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। মামলাটি তদন্ত করে ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। অভিযোগপত্রে তাঁর বিরুদ্ধে ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

এ ছাড়া অভিযোগপত্রে ২১৯ কোটি ৪৮ লাখ ৫৮ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, এ টাকা তিনি পাচার করেছেন। গত বছরের ২২ মার্চ অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তাঁর সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তখন র‍্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গ্রেপ্তারের সময় সম্রাট ও আরমান মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তাঁদের কাছে বিদেশি মদ ছিল। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।

গ্রেপ্তারের পর সম্রাট ও আরমানকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আনা হয়। পরে সম্রাটকে নিয়ে তাঁর কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালায় র‍্যাব। সেখানে বন্য প্রাণীর চামড়া, মাদক ও অস্ত্র পাওয়ার কথা বলা হয়। বন্য প্রাণীর চামড়া রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।