হাতি পালনে লাইসেন্স প্রদান কার্যক্রম স্থগিত

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

ব্যক্তিপর্যায়ে হাতি লালন-পালনের জন্য লাইসেন্স প্রদান ও বিদ্যমান লাইসেন্স নবায়ন কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশ দেন।

হাতি লালন-পালনে লাইসেন্স প্রদান ও বিদ্যমান লাইসেন্স নবায়ন বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে অভিনেত্রী জয়া আহসান ও প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের পক্ষে ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই রিট করা হয়।

সার্কাসে, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে ও চাঁদা তোলার মতো কাজে হাতিকে ব্যবহার এবং এসব কাজের জন্য নির্যাতনের মাধ্যমে হাতিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কারণ তুলে ধরা হয় রিটে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাকিব মাহবুব। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।

শুনানিতে আইনজীবী সাকিব মাহবুব বলেন, সরকার ব্যক্তিপর্যায়ে হাতি লালন-পালনের জন্য লাইসেন্স দিচ্ছে। কিন্তু কাদের দেওয়া হচ্ছে? চাঁদা নেওয়াসহ বিভিন্ন কাজে হাতিকে ব্যবহারের জন্য নির্যাতনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়—এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে।

একপর্যায়ে আদালত বলেন, নতুন লাইসেন্স প্রদান আপাতত বন্ধ থাকবে। রুল ও স্থগিতাদেশ দেওয়া হলো।

আরও পড়ুন

পরে আইনজীবী সাকিব মাহবুব প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাইকোর্ট রুল দিয়ে হাতি পালনের জন্য নতুন করে লাইসেন্স প্রদান ও লাইসেন্স নবায়ন কার্যক্রম স্থগিত করেছেন। লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নের মাধ্যমে সার্কাসে, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে ও চাঁদা তোলার মতো কাজে হাতিকে ব্যবহারে নিষ্ঠুর নির্যাতনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। প্রশিক্ষণের নামে হাতির ওপর নির্যাতন এবং অপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।’

রিট আবেদনকারীদের ভাষ্য, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) লাল তালিকাভুক্ত প্রাণী হিসেবে এশিয়ান হাতি বর্তমানে মহাবিপন্ন। এ সত্ত্বেও বন বিভাগ ব্যক্তিমালিকানায় হাতি পালনের জন্য লাইসেন্স দিয়ে থাকে। সার্কাস ও চাঁদাবাজিতে বাধ্য করতে হস্তীশাবককে নির্মম অত্যাচারের মধ্য দিয়ে প্রশিক্ষিত করা হয়।

আরও পড়ুন

হাতির মাহুত চাঁদাবাজির সময় একটি ধাতব হুক হাতে নিয়ে বসে থাকেন, যা দিয়ে তিনি হাতির শরীরের বিভিন্ন দুর্বল স্থানে আঘাত করে চাঁদাবাজিসহ মানুষের ওপর চড়াও হতে বাধ্য করেন বলে রিটে উল্লেখ করা হয়। রিট আবেদনকারীদের ভাষ্য, এসব কার্যক্রম ২০১২ সালের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১৯ সালের প্রাণিকল্যাণ আইন এবং হরিণ ও হাতি লালন-পালন বিধিমালার পরিপন্থী। যে কারণে হাতি পালনে লাইসেন্স দেওয়া বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

আরও পড়ুন