ইয়ানমার কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহারে খুশি কৃষক

ইয়ানমার কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহারে খুশি কৃষক
ছবি: বিজ্ঞপ্তি

শ্রমিক না পাওয়া, প্রকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে ফসল তুলতে অনেক সময় লেগে যায়। একই কারণে অনেক সময় ফসল নষ্টও হয়ে যায়। এ ছাড়া খেতে ফসল তুলতে খরচ হয় কৃষকের বেশি টাকা। এ সব নানা কারণে ফসল তোলা নিয়ে দুচিন্তায় থাকে কৃষকরা। কৃষকদের এমন সব সমস্যা সমাধানে বন্ধুর হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ইয়ানমার কম্বাইন হারভেস্টার।

জমি চাষ থেকে শুরু করে লাগানো, কাটা, শুকানো, ঝাড়া, মাড়াই সবকিছুর একটা পূর্ণাঙ্গ সমাধান করে দিচ্ছে ইয়ানমার কম্বাইন হারভেস্টার। কৃষিনির্ভর এ যন্ত্রটি কৃষকের জন্য সাশ্রয়ী ও ঝামেলামুক্ত। এ ইয়ানমার কম্বাইন হারভেস্টার খুশি কৃষকরাও। তেমনি একজন তরুণ কৃষক বলেন, ‘আমার পরিবারে এক ভাই, এক বোন। বাবা কৃষিকাজ করেন। আমি বিদেশে ছিলাম। বিদেশে যাওয়া আগে অনেক স্বপ্নই ছিল। বিদেশে যাওয়ার পর সেই স্বপ্নগুলো আর থাকে না। আপনি ১০ থেকে ১২ বছর বিদেশে থাকবেন। টাকা আয় করবেন। বিদেশে আয় করা টাকা হাতে থাকে না। ওই টাকা খরচ হয়ে যায়। আমি বিদেশ থাকা অবস্থাতেই ইয়ানমার কম্বাইন হারভেস্টার কেনার উদ্যোগ নেই। পরে দেখলাম গাড়িটা লাভজনক। পরবর্তী সময়ে আরও গাড়ি কিনেছি আমি। এখন আমার কর্ম এই গাড়িই। আমার পাশাপাশি আরও ১০ থেকে ১২ জনকে কর্মের ব্যবস্থা করতে পারছি। যারা বেকার ছিল।’

মাঝ বয়সী আরেক কৃষক জানান, গম কেটে বাড়িতে এনে শুকিয়ে, কেউ পিটায়ে কেউ আবার গরু দিয়ে ঘুরিয়ে তারপর ফসলগুলো ব্যবহারের উপযোগী করা হয়। এই কাজগুলো খুবই কষ্টদায়ক ছিল। কিন্তু এখন ইয়ানমার কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহার করার ফলে কাজটা খুব সহজে করা যায়। একটা মেশিনেই খেতের মধ্যে যাচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে কাটা হয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে মারাই হচ্ছে আবার বস্তা ভরে ফেলাও হচ্ছে।

সুবিধাভোগী আরেক কৃষক জানান, মেশিন না হলে গম কাটাই যেত না। এর আগে গম কাটতে খুব কষ্ট করেছি। ইয়ানমার কম্বাইন হারভেস্টার আসার পর গম কাটতে খুব সুবিধা হয়েছে। মাত্র ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় গম বাড়িতে চলে গেল। যদি শ্রমিক নিতে হতো, তাহলে এই গম কাটতে লাগত ২ হাজার ৫০০ টাকা। ২ হাজার ৫০০ টাকার পাশাপাশি যে লোক গম মারাই করে দিতে, সে এক মন গম নিতে হতো।

জমি চাষ থেকে শুরু করে লাগানো, কাটা, শুকানো, ঝাড়া, মাড়াই সবকিছুর একটা পূর্ণাঙ্গ সমাধান করে দিচ্ছে ইয়ানমার কম্বাইন হারভেস্টার
ছবি: বিজ্ঞপ্তি

এক কৃষক বলেন, ‘মেশিনটার কোনো কিছু খারাপ হলে আমরা সেটা ঠিক করতে পারি। মূলত ৮০ ভাগ কাজ আমরা পারি। এ ছাড়া সার্ভিসের জন্য সার্ভিসম্যানকে ফোন দিলে গাড়ি যেখানে থাকে সেখানেই আসে। যে অবস্থাতে গাড়িটা থাকে, সেই অবস্থাতেই গাড়িটা পর্যবেক্ষণ করে। এবং বিনা পয়সাতে তারা গাড়িটা ঠিক করে দেয়। গাড়ির কোন পার্টস লাগলে আমরা এনে দিই। সার্ভিসম্যান সেটা লাগিয়ে দেয়। এবং লাগানোর পর সেটা ঠিক আছে কি না, সেটাও তারা দেখে দেয়।’

দেশের সব অঞ্চলে ইয়ানমার হারভেস্টার গ্রাহকদের বিক্রয়োত্তর সেবা ও স্পেয়ার পার্টস পৌঁছে দিতে রয়েছে এসিআই মোটরসের ইয়ানমার সার্ভিস সেন্টার। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আমাদের হারভেস্টার বেশি ভাগেই চলে গ্রাম এলাকায়।

গ্রামগঞ্জে সবখানে আমাদের সার্ভিস দিতে হবে। একজন মেকার যদি শহর থেকে গ্রামে এসে সার্ভিস দেয় তাহলে ব্যবহারকারীকে অনেক ঝামেলার মধ্যে পড়তে হয়। এ ছাড়া অনেক সময়ও লেগে যাবে। এ জন্য আমার সার্ভিসে সেন্টটারগুলো সেখানেই স্থাপক করি, যেখানে অনেকগুলো হারভেস্টার একসঙ্গে চলে। আমাদের সার্ভিস ভ্যান আছে..., যে ভ্যানগুলোর মধ্যে সার্ভিসটুলস, বিভিন্ন যন্ত্রাংশ এবং টেকনিশিয়ান থাকে। মাঠে–ঘাটে যেখানে কাস্টমারের হারভেস্টারটা সমস্যা হয়, সেখানেই আমরা যাই। আমাদের মোট ৪০০ জন টেকনিশিয়ান আছে। যারা মোটরসাইকেল নিয়ে সারা বাংলাদেশে বিরাজ করছে।

ইয়ানমার কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহার করা এক কৃষক বলেন, ‘এসিআই মোটর আমাদের সেবা দিচ্ছে, তাতে বলাই যায়, তারা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। তারা ভালো অবদান রাখছে আমাদের উন্নয়নের জন্য।’