বর্তমান বিশ্বে ব্যবহৃত ৯০ শতাংশ ওষুধের মূল উপাদান প্রাকৃতিক উৎস থেকে পাওয়া। এর মধ্যে আছে গাছগাছড়া, জীবজন্তু ও খনিজ পদার্থ। সনাতন চিকিৎসাবিদ্যার চর্চা যাঁরা করছেন, তাঁদের কাছে প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি ওষুধের মান নিয়ে বৈজ্ঞানিক তথ্য কম পাওয়া যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওষুধবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে আজ শনিবার সকালের একটি অধিবেশনে দিল্লির জামিয়া হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আহমেদ এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি অনুষদ ও ফার্মাসি বিভাগ যৌথভাবে দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
সৈয়দ আহমেদ বলেন, সনাতন চিকিৎসার বিষয়ের দায়িত্বে আছে ভারত সরকারে আয়ুস মন্ত্রণালয়। এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রায় ১৫ লাখ সনাতন চিকিৎসক আছেন। তাঁরা আয়ুর্বেদ, যোগ, ইউনানি, সিদ্ধ ও হোমিওপ্যাথির চর্চা করেন। তবে অনেক সনাতন চিকিৎসক রোগীকে যে ওষুদ ব্যবহারের পরামর্শ দেন, সেই ওষুধের মান সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখেন না। এটাই আধুনিক ও সনাতন ওষুধ ব্যবহারকারীদের মধ্যে একটি বড় পার্থক্য।
উদাহরণ হিসেবে ভারতের এই সনাতন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ বলেন, বাজারে একই সঙ্গে প্যারাসিটামল ও অশ্বগন্ধা বিক্রি হয় বা কিনতে পাওয়া যায়। দুটি ওষুধ একই কাজে ব্যবহৃত হয়। প্রথম ওষুধটি ব্যবহারের পরামর্শ দেন অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসকেরা, দ্বিতীয়টি সনাতন চিকিৎসকেরা। প্রথম ওষুধটির মান কী অথবা ওষুটির মধ্যে কী উপাদান কী পরিমাণে আছে, তা জানার বা পরীক্ষা করার বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা আছে।
কিন্তু অশ্বগন্ধার ক্ষেত্রে তা নেই। তিনি বলেন, ভেষজ ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ করা, এসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শনাক্ত করা সনাতন চিকিৎসাপদ্ধতির জন্য চ্যালেঞ্জ।
অন্য একটি অধিবেশনে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা উদ্ভিদবিজ্ঞানী বা অন্য বিজ্ঞানীদের সঙ্গে যৌথভাবে কীভাবে কাজ করতে পারেন, তা বর্ণনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব।
বাংলাদেশে পরিবার পরিকল্পা কর্মসূচিতে দীর্ঘস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে নারীর শরীরে ইমপ্লান্ট ব্যবহার করা হয়। বহু বছর ধরে এই ইমপ্লান্ট বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো। এখন টেকনো ড্রাগ লিমিটেড নামের দেশেরই একটি প্রতিষ্ঠান এই ইমপ্লান্ট দেশেই তৈরি করছে। বিদেশ থেকে প্রযুক্তি এনে কীভাবে ইমপ্লান্ট উৎপাদের কাজটি শুরু করলেন, এক পৃথক অধিবেশনে তার বর্ণনা দেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ জালাল উদ্দিন আহমেদ।
অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আজ সন্ধ্যায় এই সম্মেলন শেষ হবে।