স্বৈরশাসকের আমলে যে মাত্রায় অপরাধ হয়েছে, সবার বিচার করা যাবে না: তাজুল ইসলাম

গুমবিষয়ক ব্যক্তিদের সংগঠনের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। ঢাকা, ২১ এপ্রিলছবি: প্রথম আলো

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেছেন, স্বৈরশাসকেরা পুরো পুলিশ বাহিনীকে নষ্ট করে ফেলেছে। আসামি পুলিশ, তদন্ত কাজেও পুলিশকেই ব্যবহার করতে হচ্ছে। কারণ, কোনো বিকল্প নেই। যে মাত্রায় অপরাধ হয়েছে, তাতে সবার বিচার করা যাবে না। কনস্টেবল পর্যন্ত নিম্নপদস্থ কর্মকর্তার বিচার করতে হলে কমপক্ষে ৫০ বছর সময় লাগবে।

আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে গুমের শিকার নির্যাতিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে করা সন্ত্রাসবিরোধী মামলাসহ সব মামলা প্রত্যাহার, নিরাপত্তা দেওয়া এবং তাদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতের দাবিতে আয়োজিত এক সভায় তাজুল ইসলাম এসব কথা বলেন। ভয়েস অব এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারড পারসনস (ভিওইডি) আলোচনা সভাটির আয়োজন করে।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না থাকলে কোনো গুম হতো না। তাঁর অমর হওয়ার স্পৃহা, ক্ষমতায় থাকার স্পৃহা ও লুটপাট করার স্পৃহা তাঁকে দানবে পরিণত করেছিল। তিনি অপরাধের নির্দেশ দিয়েছেন, আর নিচের দিকের কমান্ডাররা সেটা বাস্তবায়ন করেছেন। সুতরাং সুপিরিয়র কমান্ডারদের বিচার করলে আর গ্রাউন্ড লেভেলের ফোর্সদের বিচার করার দরকার নেই।’

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের যে বাহিনীগুলোর সুনাম ক্ষুণ্ন করা হয়েছে অপরাধের মাধ্যমে, সে বাহিনীগুলা আমাদের প্রাণ। আমাদের সেনাবাহিনী, আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো, এই রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পতাকা তাদের হাতে দিয়েছি; কিন্তু সেখানে কিছু দুর্বৃত্ত ঢুকে এ অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে। ওই দুর্বৃত্তের দায় আমাদের বাহিনীগুলোর নয়।’

সভায় গুমফেরত প্রায় ৭০ জনের মতো ভুক্তভোগী উপস্থিত ছিলেন। মারুফ জামান নামের একজন নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি নিজে এই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার শিকার। আজ আমি কথা বলছি যাতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়, আমরা যাতে ক্ষতিপূরণ পাই এবং হাসিনার বানানো দমনমূলক নিপীড়নের আইন বাতিল হয়।’

সভায় আরও বক্তব্য দেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, নেক্সাস ডিফেন্স অ্যান্ড জাস্টিসের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ হাসান নাসির, জাতীয় মুক্তি পরিষদের সম্পাদক ফাইজুল হাকিম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আমান আজমী প্রমুখ।