সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে
ছবি–সংগৃহীত

বিশ্বের শত বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ মহামারি কোভিড। ভয়াবহ এ মহামারি নিয়ন্ত্রণে নানা বিষয়ে সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ভ্যাকসিন-সংক্রান্ত অভাবনীয় সাফল্য এবং বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতকে সম্পৃক্তকরণ ও উদ্বুদ্ধ করতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে তাঁকে সংবর্ধনা দেয় বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ)।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে
ছবি–সংগৃহীত

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনা মহমারিতে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল—উভয়ই একসঙ্গে কাজ করেছে। কোভিড মোকাবিলায় সাফল্যের দিক থেকে সারা বিশ্বের মধ্যে পঞ্চম এবং এশিয়ার মধ্যে ১ নম্বর হয়েছে বাংলাদেশ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। অনেকগুলো বেসরকারি হাসপাতালের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রতিবছর সারা দেশের মেডিকেল কলেজগুলোতে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির জন্য ১১ হাজার আসন রয়েছে। এ ছাড়া নার্সিং কলেজ ও ইনস্টিটিউটগুলোতে বছরে ভর্তি হয় প্রায় ৩৪ হাজার শিক্ষার্থী।’

জাহিদ মালেক আরও বলেন, ‘করোনা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যখন উন্নত দেশগুলোতে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুহার ক্রমান্বয়ে বেড়ে ভয়ংকর অবস্থার সৃষ্টি হয়, তখন বাংলাদেশে আক্রান্তের হার বাড়লেও একপর্যায়ে সেটি নিয়ন্ত্রণে এসে যায়। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যখন ভ্যাকসিন নিয়ে আলোচনা করছে, তখন বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ তা বিনা মূল্যে পেয়েছেন।’

মহামারি কোভিড নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালের উদ্যোগের প্রশংসা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা অনস্বীকার্য যে সবাই একসঙ্গে কাজ করেছে বলেই সাফল্য দ্রুত এসেছে।’ কোভিড মোকাবিলায় ভূমিকা রাখার জন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোর অবদানের প্রশংসা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে পাঁচ হাজারের বেশি বেসরকারি হাসপাতাল প্রায় ৬২ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে।’

অনুষ্ঠানে করোনা মহামারিকালে নিরলসভাবে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মানবিক কর্মপ্রয়াস পরিচালনার স্বীকৃতিস্বরূপ আজীবন সেবাদানকারী হিসেবে ‘আজীবন সম্মাননা’ দেওয়া হয় পপুলার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমানকে। এ ছাড়া কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোকে সম্মাননা সনদ প্রদান করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএমসিএ) সভাপতি এম এ মুবিন খান। এ সময় তিনি বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালগুলো পর্যাপ্ত কোভিড ডেডিকেটেড শয্যা, আইসিইউ, অক্সিজেন, প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী নিয়ে অমিক্রন মোকাবিলায় সফল হয়েছিল। দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষকে টিকাদানের আওতায় আনা হয়। এ পর্যন্ত পাঁচ বছরের বেশি ৯৬ শতাংশ মানুষ করোনার টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে। দেশে করোনার চতুর্থ ডোজ প্রদান কার্যক্রমও চলমান।’

অনুষ্ঠানে অতিথিরা
ছবি–সংগৃহীত

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিপিএমসিএর সাধারণ সম্পাদক এবং আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের চেয়ারম্যান ড. আনোয়ার হোসেন খানসহ সংগঠনটির সহসভাপতি ও গ্রীন লাইফ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মাঈনুল আহসান, সহসভাপতি ও পপুলার মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, সহসভাপতি ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী, যুগ্ম সম্পাদক ও রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল আহসান সরকার, অর্থ সম্পাদক ও তায়রুন্নেছা মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাবিবুল হক প্রমুখ।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা বাংলাদেশ রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, জাতীয় অধ্যাপক ডা. শাহলা খাতুন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. শারিফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. মো. টিটো মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউসিজি অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ এবং স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিনসহ অনেকেই।