উত্তরা ফাইন্যান্সের চেয়ারম্যানসহ পাঁচ পরিচালককে অপসারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিতে চারজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত স্বতন্ত্র পরিচালকদের মধ্য থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হবে।
নতুন পর্ষদ উত্তরা ফাইন্যান্সের প্রকৃত অনিয়মের তথ্য বের করতে বিশেষ নিরীক্ষা করাবে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় সব ধরনের উদ্যোগ নেবে। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল বুধবার এসব সিদ্ধান্ত জানিয়ে উত্তরা ফাইন্যান্সকে চিঠি দিয়েছে। আমানতকারীদের অর্থের সুরক্ষা দিতে এক দিনেই অভিযুক্ত পরিচালকদের সরিয়ে নতুন পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
উত্তরা ফাইন্যান্সের পর্ষদ থেকে যেসব পরিচালককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন চেয়ারম্যান রাশেদুর হাসান, ভাইস চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, পরিচালক জাকিয়া রহমান, নাইমুর রহমান ও কাজী ইমদাদ হোসেন। তাঁদের সবার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির টাকা নামে-বেনামে নিয়ে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।
নতুন নিয়োগ পাওয়া স্বতন্ত্র পরিচালকেরা হলেন অবসরোত্তর ছুটিতে থাকা সেনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, অবসরে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা মইনুর রহমান চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান ও হিসাববিদ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরী।
পরিচালকদের ঋণ অনিয়মের কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠান উত্তরা ফাইন্যান্সের পরিচালকদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শনে উঠে আসে, ২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী মার্চেন্ট ব্যাংকিং ও শেয়ারবাজারের মার্জিন ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৯৭ কোটি টাকা।
এর মধ্যে ৩৫০ কোটি টাকা জমা হয়েছে উত্তরা ফাইন্যান্সের বিভিন্ন পরিচালকের ব্যাংক হিসাবে। কোনো ধরনের আবেদন, প্রস্তাব বা অনুমোদন ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির হিসাব থেকে পরিচালকদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরাসরি টাকা ছাড় করা হয়েছে। এর বাইরে উত্তরা মোটরস ও উত্তরা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ৩৩৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে কোনো অনুমোদন ছাড়া।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কিছু লেনদেনের নথিপত্রও খুঁজে পায়নি, তাই সেসব লেনদেন নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে। ভালো মানের এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও এ ধরনের ঘটনা পুরো খাতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।