জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ১২ মামলায় অভিযোগপত্র জমা
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে হওয়া মামলার মধ্যে ১২টির অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি হত্যা মামলা এবং অন্যান্য ধারার ৯টি মামলা রয়েছে। বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযোগপত্র দেওয়া তিনটি হত্যা মামলা শেরপুরের। অন্যান্য ধারার ৯টি মামলার মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একটি, বরিশাল মহানগর পুলিশের (বিএমপি) একটি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি, সিরাজগঞ্জের দুটি মামলা রয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) দুটি মামলার তদন্ত করেছে।
গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনায় হওয়া মামলার যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত করতে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা মামলাগুলো তদারক করছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এই ১২টি মামলা ছাড়া বাকি মামলাগুলোর তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সারা দেশে ১ হাজার ৬০১টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ মামলার তদন্তে ‘সন্তোষজনক অগ্রগতি’ রয়েছে বলে জানিয়েছেন এসব মামলার তদন্ত-তদারকিসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ঘিরে হওয়া ১ হাজার ৬০১ মামলার মধ্যে ৬৩৭টি হত্যা মামলা। এসব মামলা বিশেষভাবে তদারক করছে পুলিশ সদর দপ্তর। এ-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, গত ৩০ জুন পর্যন্ত ৬০ থেকে ৭০টি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে ছিল। পর্যায়ক্রমে এসব মামলার প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
তদন্তে অগ্রগতি সম্পর্কে ধারণা নিতে ঢাকা জেলার (রাজধানী বাদে) মামলাগুলোর বিষয়ে খোঁজ নেয় প্রথম আলো। সেখানে দেখা যায়, গণ-অভ্যুত্থানের সময় নির্বিচার গুলি চালিয়ে ও হামলা করে মানুষ হত্যা ও আহত করার ঘটনায় ঢাকা জেলায় মামলা হয়েছে ১১৪টি। এর মধ্যে ১৫টি হত্যা মামলা। এসব মামলার মধ্যে ৩০টির তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
তবে এসব মামলার প্রতিবেদন দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানত চার ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে বেশির ভাগ শহীদের ময়নাতদন্ত না হওয়ায় লাশ উত্তোলন করা; মেডিকেল প্রতিবেদনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার কথা উল্লেখ না থাকা বা মৃত্যুর সঠিক কারণ লেখা না থাকা; এজাহারে ঘটনাস্থলের ভুল বর্ণনা থাকা এবং মামলায় অনেক ঢালাও আসামি থাকা। এসব কারণে পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দিতে পারছে না বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, মামলার তদন্ত ও প্রতিবেদন দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের প্রধান বিবেচনা হলো সেটি যেন নিখুঁত, নির্ভুল ও গ্রহণযোগ্য হয়।