ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদন: নাগরিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ‘আংশিক স্বাধীন’

বৈশ্বিক স্বাধীনতার সূচকে টানা চতুর্থবারের মতো রাজনৈতিক অধিকারচর্চা ও নাগরিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ‘আংশিক স্বাধীন’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৯ থেকে শুরু করে ২০২২ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক অধিকারচর্চা ও নাগরিক স্বাধীনতার চর্চায় বাংলাদেশ ‘আংশিক স্বাধীনের’ শ্রেণিতে থাকলেও স্কোর বেড়েছে। গত বছর বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৩৯, এবার তা বেড়ে হয়েছে ৪০।

ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ফ্রিডম হাউসের বার্ষিক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ‘বিশ্বে ২০২৩ সালে স্বাধীনতা: গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের ৫০ বছর’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে টানা ১৭ বছর ধরে বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতার মানের অবনমন হচ্ছে। এরপরও যে দেশগুলোতে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং যে দেশগুলোর পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি, তাদের মধ্যে ব্যবধান কমেছে। ২০০৬ সালে স্বাধীনতার নেতিবাচক প্রবণতা শুরুর ব্যবধানের হার এবারই সবচেয়ে কম।

ফ্রিডম হাউসের সবশেষ প্রতিবেদনে গত ১০ বছরে স্বাধীনতার অবনতি হয়েছে, এমন দেশের একটি তালিকা করেছে। ওই তালিকায় বাংলাদেশের নাম রয়েছে।

২১০টি দেশ ও অঞ্চলের অবস্থান ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনে ‘মোটেও স্বাধীন নয়’, ‘আংশিক স্বাধীন’ ও ‘স্বাধীন’—এই তিন শ্রেণিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের রাজনৈতিক অধিকারচর্চা ও নাগরিক স্বাধীনতা মানদণ্ড নির্ধারণ করে থাকে।

প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অধ্যায়ে বলা হয়েছে, বিরোধী দল এবং এর সঙ্গে যুক্ত বলে যাদের ধারণা করা হয় তাদের, গণমাধ্যম এবং নাগরিক সমাজকে অব্যাহত হয়রানির মাধ্যমে নিজের রাজনৈতিক ক্ষমতা সুসংহত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দুর্নীতি অবাধে ঘটছে এবং রাজনীতিকরণের মধ্য দিয়ে দুর্নীতিবিরোধী প্রয়াসকে দুর্বল করা হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যক্রম পরিচালনায় দুর্বলতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তারা দায়মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য বাংলাদেশে গুরুতর সমস্যা।

ফ্রিডম হাউস বৈশ্বিক স্বাধীনতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অধিকার এবং নাগরিক স্বাধীনতাকে বিবেচনায় নেয়। রাজনৈতিক অধিকারের মধ্যে রয়েছে নির্বাচনী ব্যবস্থা ও স্বচ্ছতা, রাজনৈতিক বহুত্ববাদ ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ, সরকারের কার্যকারিতা, নীতিনির্ধারণী ব্যবস্থা, ক্ষমতার ব্যবহার ও স্বচ্ছতা-সম্পর্কিত নানা বিষয়।

অন্যদিকে নাগরিক স্বাধীনতার মধ্যে রয়েছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও বিশ্বাস, মানবাধিকার সংস্থাসহ সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর ভূমিকা, আইনের শাসন ও বিচারব্যবস্থা, ব্যক্তিস্বাধীনতা।