অত্যাবশ্যকীয় পরীক্ষার মূল্য নিয়ন্ত্রণ করবে সরকার

রয়টার্স প্রতীকী ছবি

রোগনির্ণয়ের অত্যাবশ্যকীয় পরীক্ষার তালিকা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ তালিকায় থাকা পরীক্ষাগুলোর মূল্য নির্ধারণ করে দেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দেশের মানুষের চিকিৎসা ব্যয় কমানোর জন্য এ উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার রাজধানীতে ‘স্বাস্থ্যসেবায় গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে) অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান।

রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এ সভার আয়োজন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মতবিনিময় সভা হলেও অনুষ্ঠানটি কার্যত সংবাদ সম্মেলনের মতো প্রশ্ন ও উত্তরের অনুষ্ঠানে পরিণত হয়।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রণালয় অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা হালনাগাদ করার জন্য টাস্কফোর্স গঠন করেছে। এ তালিকা তৈরির জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দুজন বিশেষজ্ঞ এখন বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। ওই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে অত্যাবশ্যকীয় রোগনির্ণয় পরীক্ষার তালিকা তৈরি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রণালয় এটিতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী বলেন, বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করা হবে দেশের মানুষের জন্য কোন কোন পরীক্ষা অত্যাবশ্যকীয়। সবার সঙ্গে আলোচনা করে এসব পরীক্ষার মূল্যও সরকার নির্ধারণ করবে। তিনি আরও বলেন, ওষুধের পেছনে ব্যয়ের মতো মানুষের স্বাস্থ্য ব্যয়ের একটি বড় অংশ চলে যায় রোগনির্ণয় পরীক্ষায়।

অনুষ্ঠানের পর স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, অত্যাবশ্যকীয় রোগ শনাক্তের পরীক্ষার তালিকা তৈরি ও তালিকায় থাকা পরীক্ষার মূল্য নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ কমিশনের প্রতিবেদনে আছে।

অনুষ্ঠানের সূচনা পর্বে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান বলেন, গণমাধ্যম মন্ত্রণালয়ের হয়ে স্বাস্থ্যের বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করে। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে তিনি নিজের আর্থিক পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে বলেন, এখন যাঁরা মন্ত্রণালয় পরিচালনা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা কঠিন।

অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমান বলেন, ম্যাট্রিক্সের ভিত্তিতে সরকারি-বেসরকারি সব মেডিকেল কলেজের সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হচ্ছে। স্কোর কত হলে ভর্তি বন্ধ রাখা হবে, স্কোর কত হলে মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি। তবে কোন মেডিকেল কলেজের কী পরিস্থিতি, তা দেশের মানুষের সামনে উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। ফলে সাধারণ মানুষ ছেলেমেয়ে ভর্তি করানোর ব্যাপারে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইতিমধ্যে ওষুধের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের নেওয়া কিছু উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন। ওই মন্তব্যের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, বিজ্ঞানসম্মত ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতিতে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করা হবে। এর মূল উদ্দেশ্য ওষুধ সহজপ্রাপ্য করা। একই সঙ্গে সরকার ব্যবসায়ীদের ন্যায়সংগত মুনাফার সুযোগও নিশ্চিত করবে।

সম্প্রতি শিশু হাসপাতালে ৬৫ জন চিকিৎসকের নিয়োগ বাতিল হয়েছে। কিন্তু এই নিয়োগের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান বলেন, নিয়োগ বাতিল হয়েছে। নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে, দুর্নীতি হয়নি।