চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার বিচার ৬ মাসের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার বিচার ছয় মাসের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
মামলার আসামি আশীষ রায় চৌধুরীর জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন খারিজ করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ আজ সোমবার এই আদেশ দেন।
এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ ছয় মাসের মধ্যে মামলাটির বিচার শেষ করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
গত ২৯ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগে ওঠে। সেদিন আসামিপক্ষের আইনজীবী জানান, ছয় মাস সময় ১১ অক্টোবর শেষ হয়েছে। আপিল বিভাগের আদেশ বাস্তবায়িত হয়নি।
এমন প্রেক্ষাপটে ৬ ফেব্রুয়ারি দেওয়া আদেশ অনুসারে উল্লেখিত (ছয় মাস) সময়ের মধ্যে মামলাটির বিচার কেন শেষ হয়নি, তার কারণ এক সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিচারককে জানাতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
একই সঙ্গে আশীষ রায়কে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) শুনানির জন্য ১২ নভেম্বর তারিখ রাখা হয়।
এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে বিচারকের প্রতিবেদন আপিল বিভাগে উপস্থাপন করা হয়।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক এম আলী আহমেদ প্রতিবেদনে বিলম্বের কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন। আসামিপক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী পলাশ চন্দ্র রায়, সেলিম আশরাফ চৌধুরী ও এম হারুনুর রশীদ খান।
পরে আইনজীবী সেলিম আশরাফ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দিয়ে ছয় মাসের মধ্যে মামলাটির বিচার শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে আশীষ রায়কে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রইল। তাঁর কারামুক্তিতে আইনগত বাধা নেই।
গত ১০ জানুয়ারি এই মামলায় আসামি আশীষ রায়কে হাইকোর্ট জামিন দেন। এই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার আদালতে আবেদন করে।
১৬ জানুয়ারি চেম্বার আদালত আশীষ রায়ের জামিন স্থগিত করে নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। ৬ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ ছয় মাসের মধ্যে বিচার শেষ করতে নির্দেশ দেন। এই সময় পর্যন্ত আসামি আশীষ রায়ের জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি মুলতবি (স্ট্যান্ড ওভার) রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি নিয়ে আজ আদেশ দেওয়া হয়।
১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর ট্রাম্প ক্লাবের সামনে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করেন সন্ত্রাসীরা। পরে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্তে উঠে আসে, আলোচিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, ট্রাম্প ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম ও আশীষ রায়ের সঙ্গে বিরোধের জেরে ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়।
সোহেল চৌধুরী খুন হওয়ার পরের বছর আশীষ রায়সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। দুই বছর পর ২০০১ সালে বিচার শুরুর আদেশ হয়। এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে এক আসামি উচ্চ আদালতে গেলে আটকে যায় বিচার কার্যক্রম। উচ্চ আদালতের আদেশের পর গত বছর আবার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।