ওয়াশিং মেশিনে ঝামেলাহীন ঝলমলে কাপড়
গৃহস্থালি কাজ হলো অদৃশ্য শ্রম। দিনের বেশির ভাগ সময় অনেককেই এ কাজে শ্রম দিতে হয়। গৃহস্থালির নানা কাজের মধ্যে কাপড় ধোয়া একটি ভারী কাজ। ঘরের কাজে সহায়তাকারীকে দিয়ে আমরা এই কাজ করিয়ে নিলেও কারও কারও পড়তে হয় নানা প্রাত্যহিক বিড়ম্বনায়। এই বিড়ম্বনা থেকে রেহাই পেতে ব্যবহার করতে পারেন ওয়াশিং মেশিন। প্রযুক্তির আশীর্বাদে ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়া এখন অনেকটাই সহজ।
ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধুলে কি ঠিকমতো কাপড় পরিষ্কার হয়? এটা ব্যবহারে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসবে না তো? দাম-ই বা কেমন? এই যন্ত্রসঙ্গী কেনার আগে এ ধরনের প্রশ্নই মনে উঁকি দেয়। ওয়াশিং মেশিনের নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন ইলেকট্রোমার্ট লিমিটেডের ন্যাশনাল সেলস ম্যানেজার জুলহাক হোসাইন। তিনি বলেন, ‘প্রাত্যহিক নানা কাজের ব্যস্ততা আর ঝামেলার মধ্যে এই যন্ত্র থাকলে ঘরের কাজগুলোকে আর জটিল মনে হয় না। বাজারে প্রধানত দুই ধরনের ওয়াশিং মেশিন পাওয়া যায়—ড্রাম ও ফ্রন্ট লোডার। সাধারণ আকারের ওয়াশিং মেশিনগুলোতে কাপড় ধোয়া এবং পানি ঝরানোর কাজ একসঙ্গেই হয়ে থাকে। তবে কোনো মেশিনই শতকরা ১০০ ভাগ কাপড়ের পানি ঝরাতে পারে না। ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পানি ঝরাতে পারে। বৈশিষ্ট্যভেদে কিছু মেশিন ম্যানুয়াল, কিছু কিছু সেমি অটোমেটিক বা আধা স্বয়ংক্রিয় আর কিছু অটোমেটিক বা পুরো স্বয়ংক্রিয়।’
জুলহাক হোসাইন আরও জানান, অটো ওয়াশিং মেশিনের অটো বাটন চাপ দিলে পানি ও কাপড় স্পিন করাসহ সব কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে থাকে। এই মেশিনগুলোয় ডিটারজেন্ট পাউডার রাখার জন্য আলাদা বক্সও থাকে।
কিছু কিছু মেশিনে হট ওয়াশের ব্যবস্থাও থাকে। ফলে সুইচ টিপলেই মেশিনে গরম পানি দিয়ে কাপড় ধোয়ার ব্যবস্থা হয়। অটো ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার জন্য সময় লাগে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট। যখন আপনি ম্যানুয়াল ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করবেন, তখন প্রতিটি কাজ আলাদা বাটন টিপে করতে হয়। ব্র্যান্ডের ধরন অনুসারে এই ওয়াশিং মেশিনগুলোর দাম ভিন্ন ভিন্ন হয়।
ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার সময় কাপড়ের ভিন্নতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সুতি কাপড়ের সঙ্গে জর্জেট কিংবা সাদা আর রঙিন কাপড় একসঙ্গে ব্যবহার করতে হয় না। কাপড়ের ময়লা হওয়ার ওপর নির্ভর করে ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে হবে। মেশিনে ধোয়া কাপড় অবশ্যই ফ্যানের নিচে কিংবা রোদে শুকিয়ে রাখতে হবে। মেশিনের পাইপ যাতে সব সময় পরিষ্কার থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
অনেকেই ওয়াশিং মেশিনে সরাসরি গরম পানি ব্যবহার করেন। এটা ঠিক নয়। ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও খেয়াল রাখতে হবে, স্পিনিংয়ের সময় যাতে ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করা না হয়। ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার সময় সাবানের পরিবর্তে লিকুইড সাবান অথবা ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে হবে।
কোথায় পাবেন, কেমন দাম
রাজধানীসহ সারা দেশে ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকান বা বাজারে পেয়ে যাবেন পছন্দের ওয়াশিং মেশিনটি। অটো ও ম্যানুয়াল—দুই ধরনের মেশিনই পাওয়া যায়। পরিবারের সদস্যসংখ্যা এবং কাপড় ধোয়ার পরিমাণের ওপর নির্ভর করে ওয়াশিং মেশিন কিনতে হবে। কেজি হিসেবে ম্যানুয়াল ও অটো ওয়াশিং মেশিনের দামেও রয়েছে ভিন্নতা। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওয়াশিং মেশিনের দাম শুরু ১১ হাজার টাকা থেকে। আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ ওয়াশিং মেশিনের মূল্য সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। চাইলে অনলাইন ঘুরেও কিনতে পারেন ওয়াশিং মেশিন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ছাড় বা অফার দিয়ে থাকে। সেদিকে খেয়াল রাখলে কিছুটা লাভবান হবেন।