ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধের চেষ্টা করছে সরকার: আইনমন্ত্রী

রাজধানীর বনানীর ঢাকা আর্ট গ্যালারিতে আজ শনিবার এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিতর্ক’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
ছবি: সংগৃহীত

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের ফলে বর্তমানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ অনেক কমেছে। সরকার এ আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধ করার চেষ্টা করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।

আজ শনিবার রাজধানীর বনানীর ঢাকা আর্ট গ্যালারিতে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিতর্ক’ বিষয়ক এক গোলটেবিল বৈঠকে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আনিসুল হক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাক্‌স্বাধীনতা বা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য হয়নি। এটি জনস্বার্থে করা হয়েছে। কেউ যদি মনে করেন, এই আইন সাংবাদিকদের লক্ষ্য (টার্গেট) করে করা হয়েছে, তা নয়।

আনিসুল হক বলেন, ‘বিশ্বে এখন ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে, দণ্ডবিধির (পেনাল কোড) ধারায় চুরি! এটি হতো আগে সশরীর, এখন যেই মুহূর্তে চুরি ডিজিটালি হওয়া শুরু করল, তখন এটিকে কি দণ্ডবিধির ধারায় শাস্তিযোগ্য করা যাবে? পারবেন না। দণ্ডবিধির অনেক ধারাতেই ডিজিটাল মাধ্যমে অবমাননার কথা নেই। যার জন্য এসব বিষয়কে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় আনা হয়েছে।’

এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের আইন পর্যালোচনা করা হয়েছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘উত্তম চর্চা নিয়ে এখনো আলাপ করছি। একই সময়ে হয়তো বলবেন, আলোচনা করা হচ্ছে; কিন্তু আইনের তো অপব্যবহার হচ্ছে। আমি এ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বসেছি, আমরা একমত হয়েছি যে এই আইনে মামলা করার সঙ্গে সঙ্গে সাংবাদিকদের আগেই গ্রেপ্তার করা হবে না। পাশাপাশি যে কেউ মামলা করুক না কেন, সেটিকে এই মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে না। যে অভিযোগগুলো আসছে, সেগুলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যে ধারাগুলো আছে, সেগুলোর অভিযোগ কি না, নাকি হয়রানি করা হচ্ছে, এগুলো দেখার জন্য একটি সেল আছে। সেই সেলকে কার্যকর করে এই অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কোনো ধারার মধ্যে পড়ে কি না, সেটি দেখা হবে। তারপর যখন আদালতে বা থানায় পাঠানো হবে, তখনই এটি মামলা হিসেবে রুজু করা হবে।’

আইনমন্ত্রী বলেন, অজামিনযোগ্য মানে এই না যে আসামি কোনো দিন জামিন পাবেন না। অজামিনযোগ্য অর্থ আসামিকে পুলিশ থানা থেকে ছাড়তে পারবেন না। বিজ্ঞ আদালত বিবেচনা করবেন, তাকে জামিন দেবেন কি দেবেন না।

আনিসুল হক বলেন, উপাত্ত সুরক্ষা আইন নিয়ে আরও আলোচনা হবে। এরপর সারা বিশ্বের উপাত্ত সুরক্ষার জন্য যে মানসম্মত আইন আছে, সে রকম আইন করা হবে। এই আইন কারও উপাত্ত নিয়ন্ত্রণের জন্য করা হবে না। এটা করা হবে শুধুই উপাত্ত সুরক্ষার জন্য।

একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবুর সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন এডিটরস গিল্ডের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, মানবাধিকারকর্মী আইনজীবী জেড আই খান পান্না, সংস্কৃতিজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, আর্টিকেল-১৯-এর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ফারুক ফয়সাল, বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ও চলচ্চিত্র নির্মাতা কামার আহমেদ সায়মন।