আঙিনায় পানি জমিয়ে রাখলে শাস্তি: এলজিআরডি মন্ত্রী

ঢাকা উত্তর সিটির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সচেতনতামূলক শোভাযাত্রাছবি: আশরাফুল আলম

কেউ বাসাবাড়িতে ও আশপাশের আঙিনায় পানি জমিয়ে রেখে এডিস মশা প্রজননে ভূমিকা রাখলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। মন্ত্রী বলেন, নগরবাসীকে বারবার সচেতন ও সতর্ক করা হয়। এরপরও ইচ্ছাকৃতভাবে অনেকেই পানি জমিয়ে রেখে নিজের ও অন্যদের ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আয়োজনে এডিস মশা এবং ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া সচেতনতা অভিযান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, সিটি করপোরেশনের পক্ষে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মশা নিধন করা কঠিন। তাই মাঠে-ময়দানে প্রচার চালিয়ে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। একজনের গাফিলতিতে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না। এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই কেউ অবহেলা করে পানি জমিয়ে রাখলে এবং তাতে মশার প্রজননস্থল তৈরি হলে দুই সিটি করপোরেশন ভ্রাম্যমাণ আদালত চালিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা ছাড়া এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, সবাই সচেতন হলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে না। বৃষ্টি হলে ছাদে, ফুলের টবে, পরিত্যক্ত টায়ার ও টিউবে পানি জমে। এ ছাড়া নির্মাণাধীন বাসাবাড়ি, বেসমেন্ট ও পরিত্যক্ত জায়গায় জমে থাকা পানিতে এডিস মশা জন্মায়। এসব জায়গায় পানি জমতে না দিলে এডিস মশার প্রজনন ধ্বংস হবে।

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘তিন দিনে এক দিন, জমা পানি ফেলে দিন’।

নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার প্রজননস্থল থাকায় সেখানে ‘সাবধান, এই বাড়ি বা স্থাপনায় এডিস মশার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে’ এমন স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হয়
ছবি: প্রথম আলো

তিনি আরও বলেন, রোদের পর বৃষ্টি, বৃষ্টির পর রোদ, এ রকম আবহাওয়া এডিস মশার বংশ বিস্তারে সহায়ক। তাই ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে। কারণ, একা কারও পক্ষে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়, বিশেষ করে প্রত্যেকের বাসাবাড়ি ও আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলে, পানি জমতে না দিলে এডিস মশার প্রজনন রোধ করা সম্ভব।

এরপর মন্ত্রী ও মেয়র ঢাকা উত্তর সিটির ৬ নম্বর ওয়ার্ডবাসীকে নিয়ে সচেতনতামূলক শোভাযাত্রায় অংশ নেন এবং প্রচারপত্র বিতরণ করেন। এ সময় পল্লবী বি ব্লকের ২ নম্বর সড়কের কয়েকটি নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার প্রজননস্থল থাকায় ওই বাসাগুলোতে ‘সাবধান, এই বাড়ি বা স্থাপনায় এডিস মশার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে’ এমন লেখা প্রচারপত্রের স্টিকার লাগিয়ে দেন এবং পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

মশার লার্ভা নিধনে ওষুধ স্প্রে করা হয়। মিরপুরের পল্লবী আবাসিক এলাকা
ছবি: প্রথম আলো

সচেতনতা কর্মসূচিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, নাট্য অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।