আপাতত ইউনাইটেড হাসপাতালকে ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে না

হাসপাতালে আগুনে মারা যান ৫ রোগী
ফাইল ছবি

রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেন্টারে আগুনে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারকে আপাতত ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের করা আবেদন নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

আদালত বলেছেন, হাইকোর্টের যেকোনো রিট বেঞ্চে রিট আবেদনকারীপক্ষের রিটটিগুলো উপস্থাপন করার স্বাধীনতা থাকবে। সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের আইন অনুসারে যেকোনো আদেশ দেওয়ার স্বাধীনতা থাকবে। আবেদন (ইউনাইটেডের) নিষ্পত্তি করা হলো।

ফলে ইউনাইটেড হাসপাতালকে আপাতত ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে ৩০ লাখ টাকা করে দিতে হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান।

এর আগে ২৭ মে হাসপাতালটির মূল ভবনের বাইরে আইসোলেশন ইউনিটে আগুন লেগে লাইফ সাপোর্টে থাকা পাঁচ রোগীর মৃত্যু হয়। তাঁরা হলেন রিয়াজুল আলম (৪৫), খোদেজা বেগম (৭০), ভারনন অ্যান্থনি পল (৭৪), মো. মনির হোসেন (৭৫) ও মো. মাহাবুব (৫০)।

আগুনে মৃত ব্যক্তিদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা পৃথক চারটি রিট করেন। এর শুনানি নিয়ে ১৫ জুলাই বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে আপাতত ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩০ লাখ টাকা করে দিতে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। ১৫ দিনের মধ্যে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে ওই অর্থ দিতে বলা হয়।

হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ আবেদন করে, যা ২১ জুলাই আপিল বিভাগের ভার্চ্যুয়াল চেম্বার কোর্টে ওঠে। সেদিন চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। সেইসঙ্গে আবেদনকারীপক্ষ (হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ) নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি হয়।

আদালতে আজ ইউনাইটেড হাসপাতালের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ, তানজিব উল আলম ও মোস্তাফিজুর রহমান খান। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন, আইনজীবী অনীক আর হক, হাসান এম এস আজীম, মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ, নিয়াজ মোহাম্মদ মাহাবুব ও শাহিদা সুলতানা।

পরে আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, সময় সাপেক্ষে চেম্বার আদালতের স্থগিতাদেশ বহাল রেখে ইউনাইটেডের আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে আপাতত ৩০ লাখ টাকা করে দিতে হচ্ছে না। তবে রিট আবেদনকারীপক্ষ যেকোনো রিট বেঞ্চে রিটটিগুলো উপস্থাপন করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের যেকোনো আদেশ দেওয়ার স্বাধীনতা থাকবে বলেছেন আপিল বিভাগ।

রিট আবেদনকারীদের অন্যতম আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, আপিল বিভাগের আদেশের ফলে এখন রিট আবেদনগুলোর ওপর হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানি করতে হবে। আদালত ক্ষতিপূরন প্রদান বিষয়ে কোনো সিন্ধান্ত দেননি। রিটগুলো আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।