ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনে দেরিতে ছাড়ল তিন ট্রেন
পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন রাজধানীর বাসিন্দারা। গতকাল বুধবার ভোর থেকে রেলযোগে ঘরে ফেরার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। গতকালের মতো আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীদের অতটা ভিড় নেই। রেলপথে ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনে আজ তিনটি ট্রেন দেরিতে ছেড়েছে।
অবশ্য এর মধ্যে একটি ট্রেন দেরিতে আসায় কমলাপুর রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ বিকল্প পথের আরেকটি ট্রেন দিয়ে নির্ধারিত সময়ে যাত্রার ব্যবস্থা করেছে।
যাত্রীরা বলছেন, অনলাইন কিংবা কাউন্টার থেকে সরাসরি তাঁদের টিকিট কাটতে এবার অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তবে সড়কপথের বিকল্প হিসেবে রেলপথে ভোগান্তি কম। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন স্টেশন ছেড়ে গেলে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন হবে বলে তাঁদের আশা।
ঈদযাত্রার প্রথম দিন গতকাল কয়েকটি ট্রেন দেরিতে কমলাপুর রেলস্টেশন ছেড়েছে। কমলাপুর রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, আজও তিনটি ট্রেন দেরিতে ছেড়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেসের আজ সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে স্টেশন ছাড়ার কথা। সেটি ২ ঘণ্টা দেরিতে স্টেশন ছেড়েছে ৮টা ৫০ মিনিটে।
এ ছাড়া চট্টগ্রামগামী কর্ণফুলী কমিউটার ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে কিন্তু ওই ট্রেন ১ ঘণ্টা ৫ মিনিট দেরি করে স্টেশন ছেড়ে যায় সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে।
কমলাপুর রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৯টা ১০ মিনিটে স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দুই ঘণ্টা দেরিতে স্টেশনে আসে রংপুর এক্সপ্রেস। এ কারণে অন্য গন্তব্যের বিকল্প একটি ট্রেনে রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রীদের পাঠানো হয়।
কর্ণফুলী ও নীলসাগর ট্রেন দুই ঘণ্টার বেশি দেরি হওয়ায় ট্রেনের ভেতরে ভ্যাপসা গরমে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েন নারী, বৃদ্ধ ও শিশুরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেনও যাত্রীরা।
সকালে স্টেশনে কথা হয় কর্ণফুলী ট্রেনের যাত্রী সরোয়ার আলমের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে কথা হয় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, 'সাহ্রি ও নামাজ শেষ করেই কমলাপুরে পৌঁছাই। কিন্তু ট্রেন ৮টা ৪৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও এখনো পৌঁছায়নি। অনেক গরম পড়েছে। আমি সবকিছু মানিয়ে নিতে পারলেও আমার বয়স্ক মা ও শিশুসন্তান রয়েছে, তাঁদের ভোগান্তি কে দেখবে।'
বেলা সোয়া ১১টার দিকে নির্ধারিত সময়েই সিলেটগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস কমলাপুর রেলস্টেশন ছেড়ে যায়। জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের যাত্রী নজরুল ইসলাম বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। তিনি পরিবারের চার সদস্যকে নিয়ে শ্রীমঙ্গলে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। নজরুল বলেন, ‘সড়কপথে যানজটের কথা ভেবে রেলে বাড়ি যাচ্ছি। স্টেশনে এসে যাত্রীদের তেমন ভিড় পেলাম না। ট্রেনও সময়মতো ছাড়বে বলে মনে হচ্ছে।'
কমলাপুর রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আমিনুল হক প্রথম আলোকে বলেন, সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২১টি ট্রেন কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে যায়। রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুই ঘণ্টা বিলম্বে এসেছে। এ কারণে অন্য একটি ট্রেন দিয়ে রংপুর এক্সপ্রেস যাত্রা করেছে। নির্ধারিত সময়েই তা কমলাপুর রেলস্টেশন ছেড়ে যায়। তিনি বলেন, 'একটি ট্রেন ছাড়তে কিছুটা বিলম্ব হতেই পারে। এতগুলো ট্রেন চালাচ্ছি আমরা। সিঙ্গেল লাইন হওয়াতে এই বিলম্ব হয়।'