এসআই আকসাদুদের নেতৃত্বে কাওলায় সেই ডাকাতি

আকসাদুদ জামান

রাজধানীর বিমানবন্দর থানার কাওলায় ১১ মাস আগে হওয়া ডাকাতির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সিআইডির প্রধান কার্যালয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) আকসাদুদ জামান। গত বুধবার রংপুরের মিঠাপুকুর থানা এলাকার শঠিবাড়ি বাজার থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করার পর গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) বলেছে, ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া চাকরিচ্যুত এক সেনাসদস্যের আদালতে দেওয়া জবানবন্দি ও তদন্তে আকসাদুদ জামানের নাম আসে। ডিবির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ১৮ আগস্ট সিআইডি এসআই আকসাদুদ জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করে। গতকাল তাঁকে আদালতের মাধ্যমে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ডিবি। এ নিয়ে এ মামলায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

ডিবি জানায়, গত বছরের ১৯ অক্টোবর সকালে বিমানবন্দর সড়কের কাওলায় দুবাইপ্রবাসী রোমান মিয়া ও তাঁর ফুফাতো ভাই মনির হোসেনকে ডিবি পরিচয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়া হয়। পরে তাঁদের মারধর করে সঙ্গে থাকা পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার, দুই হাজার দিরহাম, মুঠোফোন, কাপড়ভর্তি লাগেজসহ ৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকার মালামাল ডাকাতি করে তাঁদের পাশের জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় করা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবি।

ডাকাতদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ডিবির প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, সিসি ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় আগেই ছয় ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মধ্যে (চাকরিচ্যুত সেনাসদস্য) হাসান রাজা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ডাকাতিতে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের চালক হারুন অর রশিদ ওরফে সজীব, অটোরিকশাচালক জোনাব আলী এবং কায়ছার মাহমুদ ওরফে জাকির হোসেন সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেন। সেই জবানবন্দি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ‘সিআইডির এসআই আকসাদুদের নেতৃত্বে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকসাদুদ জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।’

গতকালের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, ‘একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। সেখানে বড় অঙ্কের টাকা লেনদেনের কথা বলা হয়েছে। মামলার তদন্তের পাশাপাশি সেই টাকা কোথা থেকে এল, আমাদের কোনো কর্মকর্তা জড়িত আছে কি না—সব বিষয় আমরা খতিয়ে দেখব।’