ওমানফেরত মুসা তৃতীয় দফায় রিমান্ডে

জাহিদুল ইসলাম হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী সুমন সিকদার ওরফে মুসা।
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর শাহজাহানপুরে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও ওমান থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা সুমন সিকদার ওরফে মুসাকে তৃতীয় দফায় তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এ আদেশ দেন।

আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ মামলায় ১০ জুন সুমন সিকদারকে ছয় দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত। পরে ১৭ জুন তাঁকে পুনরায় আরও চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত। চার দিনের রিমান্ড শেষে আজ তাঁকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি চায় পুলিশ। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তৃতীয় দফায় আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে মুসা জাহিদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। মামলার অপর আসামি শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশ ও নাসির উদ্দিনের স্বীকারোক্তিতে মুসার নাম উঠে এসেছে।

জাহিদুল ইসলাম হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মুসা ওমানে গ্রেপ্তার হন। ৯ জুন বৃহস্পতিবার তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। পরে তাঁকে নেওয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেছেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন মুসা। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শুটার মোহাম্মদ মাসুম ওরফে আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে মূল পরিকল্পনা ও সমন্বয়কারী হিসেবে মুসাকে উল্লেখ করেন। তার পর থেকে তাঁকে আমরা খুঁজছিলাম।’

হাফিজ আক্তার আরও বলেন, ‘জাহিদুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে ঘটনার আগেই সুমন সিকদার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। আমরা তদন্তের একপর্যায়ে জানতে পারি, তিনি ওমানে অবস্থান করছেন। তখন আমরা ওমানে ইন্টারপোল এনসিবির সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওমান পুলিশ মুসাকে আটক করার পর আমাদের এসকর্ট পাঠিয়ে নিয়ে আসার জন্য বলে। এরপর ডিবির মতিঝিল বিভাগের দুজন এডিসি ও পুলিশ সদর দপ্তরের ইন্টারপোল ডেস্কের একজন সহকারী কমিশনারকে ওমান পাঠানো হয়। তাঁরা মুসাকে নিয়ে দেশে ফেরেন।’

মুসা রাজধানীর শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রকাশ-বিকাশ গ্রুপ ও মানিক গ্রুপের সদস্য। তিনি মতিঝিল এজিবি কলোনিতে যুবলীগ নেতা রিজভী হাসান ওরফে বোঁচা বাবু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। ওই হত্যা মামলার বাদী রিজভী হাসানের বাবা আবুল কালাম। আবুল কালাম জাহিদুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। রিজভী হত্যা মামলা মিটমাটের জন্য মুসাসহ আসামিরা জাহিদুলের কাছে গিয়ে ব্যর্থ হন।

পুলিশ ও র‍্যাব কর্মকর্তা বলছেন, অপরাধজগৎ ও দলীয় প্রতিপক্ষ জাহিদুলকে খুন করতে রিজভী হত্যা মামলার আসামিদের ব্যবহার করা হয়েছে।

গত ২৪ মার্চ রাতে শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন জাহিদুল ইসলাম। সে সময় ঘটনাস্থলে রিকশায় বসে থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন ওরফে প্রীতিও (২২) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

আরও পড়ুন

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, তিন থেকে চার মাস আগে জাহিদুল হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিকাশ-প্রকাশ গ্রুপের অন্যতম খুনি সুমন সিকদারের সঙ্গে ১৫ লাখ টাকার চুক্তি করেন মতিঝিল ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক। এর মধ্যে প্রথমে মুসাকে ৯ লাখ টাকা দেন তিনি। ১২ মার্চ টাকা নিয়ে দুবাই চলে যান মুসা।

আরও পড়ুন