কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন দেওয়া গৃহবধূর মৃত্যু

দগ্ধ গৃহবধূ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা গেছেন
ফাইল ছবি

রাজধানীর মালিবাগের গুলবাগ ঝিলপাড় এলাকার বাসায় গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া অন্তঃসত্ত্বা কলেজছাত্রী পাপিয়া সারোয়ার (১৮) মারা গেছেন। আজ বুধবার সকাল পৌনে ছয়টায় রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাপিয়ার মৃত্যু হয়।

ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক এস এম আইউব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পাপিয়ার শরীরের ৯৫ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল। পারিবারিক কলহের জেরে গত শনিবার দুপুরে পাপিয়া গায়ে আগুন দেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায় পাপিয়ার স্বামী মো. রামিমকে আটক করেছে পুলিশ।

পারিবারিক সূত্র জানায়, পাপিয়া সারোয়ার নগরের শান্তিবাগের বেসরকারি সিটি ইন্টারন্যাশনাল কলেজের উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিন বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। তিনি গুলবাগের ঝিলপাড়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে থাকতেন। স্বামী রামিমের খিলগাঁওয়ে মোবাইল রিচার্জের দোকান রয়েছে। গত ২৮ মে দুপুর ১২টার দিকে ওই বাসায় পাপিয়া গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন।

এ সময় তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে পাপিয়ার শরীরে আগুন জ্বলতে দেখেন। পাপিয়ার মা-বাবার বাসা তাঁর বাসার কাছেই। পাপিয়াদের বাড়ির মালিকের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাঁরা এসে পাপিয়ার শরীরের আগুন নিভিয়ে ফেলেন। প্রথমে তাঁকে খিলগাঁওয়ের বেসরকারি খিদমাহ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে তাঁকে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে আসার পর ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা পাপিয়ার স্বামী রামিমকে আটক করেন।

এ ঘটনার জন্য রামিমকে দায়ী করেছেন পাপিয়ার মা পারভীন আক্তার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পাপিয়াকে বিয়ে করার পর থেকেই রামিমের অন্য এক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক হয়। এ নিয়ে ঝগড়ার জেরেই পাপিয়া নিজের শরীরে আগুন দিয়েছেন। একই কারণে এক বছর আগেও পাপিয়া হারপিক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।

আটক হওয়ার আগে মো. রামিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কী কারণে, কেন গায়ে আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। ওই সময় আমি বাসার বাইরে ছিলাম।’