ক্যানসারেরসহ বহুল বিক্রীত ওষুধ নকল করত চক্রটি

চক্রের গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে নকল ওষুধ তৈরির মেশিন, ডায়াস ও খালি বাক্স পাওয়া গেছে
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গত বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে নকল ওষুধ প্রস্তুতকারী চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তাঁরা ক্যানসারের ওষুধসহ বাজারে বহুল বিক্রীত ওষুধ নকল করতেন।

আজ শুক্রবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন তরিকুল ইসলাম, সৈয়দ আল মামুন, সাইদুল ইসলাম, মনোয়ার, আবদুল লতিফ, নাজমুল ঢালী ও সাগর আহমেদ মিলন। তাঁদের কাছ থেকে নকল ওষুধ তৈরির মেশিন, ডায়াস ও খালি বাক্স পাওয়া গেছে।

হাফিজ আক্তার বলেন, চক্রের সদস্যরা ক্যানসারেরসহ বাজারে বহুল বিক্রীত ওষুধ নকল করতেন। ঢাকার কাজলায় তাঁদের কারখানা রয়েছে। কুমিল্লা, বগুড়া ও পিরোজপুরেও নকল ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানেও অভিযান চালানো হবে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি জানায়, নকল ওষুধ প্যাকেজিংয়ের পর এগুলো মিটফোর্ড এলাকার কয়েকটি গ্রুপের মাধ্যমে সারা দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বাজারজাত করা হতো। এসব ওষুধ সেবনে কিডনি, লিভার ও হৃদ্‌যন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এগুলো মাদকের চেয়েও ক্ষতিকর।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, কোম্পানিগুলো যেসব নীতিমালা ও প্রক্রিয়া মেনে ওষুধ তৈরি করে, নকল ওষুধ প্রস্তুতকারীরা এর কিছুই অনুসরণ করেন না।

নকল ও আসল ওষুধ চেনার উপায় কী জানতে চাইলে বেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, তাঁরা এমনভাবে ওষুধ তৈরি করেন, যা সাধারণ ক্রেতার চেনার উপায় থাকে না। তবে প্রকৃত ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আসল আর নকল ওষুধের পার্থক্য বুঝতে পারে। ওষুধের প্যাকেটের সিকিউরিটি হলোগ্রামও নকল করছে চক্রটি। তিনি বলেন, আসল হলোগ্রাম অনেক শক্ত হয় আর নকলটি সফট হয়। ওষুধের ভেতরের রঙেও পার্থক্য হয়।

তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন থানায় আমার কোম্পানির ওষুধ ভেজালের ঘটনায় ৮০টি সাধারণ ডায়েরি করেছি। জড়িত অনেককে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।’
নকল ওষুধের ভয়াবহতা প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা জয় চৌধুরী বলেন, নকল ওষুধ ব্যবহারে হার্ট, লিভার ও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। নকল অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পরে দেখা যায়, আসল অ্যান্টিবায়োটিক শরীরে কাজ করে না।