গাড়ি চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারী, গ্রেপ্তার রাতেই, দাবি পুলিশের

নাঈম হাসান
সংগৃহীত ছবি

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার মো. ফারুক হোসেন দাবি করেছেন, নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে চাপা দেওয়ার সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লার গাড়ি চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারী। তাঁকে গতকাল বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার উপকমিশনার মো. ফারুক হোসেন প্রথম আলোর কাছে এ দাবি করেন। তবে দক্ষিণ সিটির পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, গাড়িটির চালক হারুন অর রশিদ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী।

আজ মো. ফারুক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সহকারীকে গাড়ি দিয়ে চালক বাসায় চলে যান। ঘটনার সময় গাড়িটি চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী নয়। রাতে পল্টন থানার পুলিশ ওই চালকের সহকারীকে গ্রেপ্তার করে। তবে তিনি চালকের সহকারীর নাম বলেননি।

মো. ফারুক হোসেন আরও বলেন, আজ দুপুর ১২টায় এ ব্যাপারে রাজধানীর পল্টন থানায় প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে।

এদিকে সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, ময়লার গাড়িটি করপোরেশনের নিয়োগ করা কোনো ভারী যানবাহনের চালক চালাচ্ছিলেন না। এটি চালাচ্ছিলেন হারুন অর রশিদ, যিনি একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। ঘটনার পর পুলিশ রাসেল নামের একজনকে আটক করেছে, যিনি একজন শ্রমিক। রাসেল সিটি করপোরেশনের স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে নিয়োগকৃত কর্মী নন। হারুন অর রশিদ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছেন।

দক্ষিণ সিটির পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, দক্ষিণ সিটিতে ভারী যানবাহন আছে ৩১৭টি। বিপরীতে চালক আছে ৮৬ জন। আটক রাসেল খানকে তিনি চেনেন না। শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন বলে শুনেছেন। গাড়িটির চালক হারুন অর রশিদ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী।

নাঈম হাসানের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা শাহ আলম
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের বাসা থেকে আরামবাগের নটর ডেম কলেজে যাওয়ার পথে গুলিস্তানে রাস্তা পার হওয়ার সময় ডিএসসিসি ময়লার গাড়ির চাপায় মৃত্যু হয় নাঈম হাসানের।

গতকাল দুপুর পৌনে ১২টার দিকে গুলিস্তান হল মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, হল মার্কেট মোড়ে বায়তুল মোকাররমগামী দক্ষিণ সিটির একটি ময়লার গাড়ি (কমপেক্টর) মোড় ঘুরে নাঈমকে প্রথমে ধাক্কা দেয়। এতে সে পড়ে যায়। এরপর গাড়িটি না থেমে তাকে চাপা দেয়।

আরও পড়ুন

গুরুতর আহত নাঈমকে পুলিশ ও পথচারীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার পরই তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। নাঈমের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার সহপাঠীরা গুলিস্তান মোড়ে এসে জড়ো হয়। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যায় নগর ভবনে। পরে আবার গুলিস্তান মোড়ে গিয়ে তারা সড়ক অবরোধ করে। বিক্ষোভকালে শিক্ষার্থীরা তাদের সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনার ন্যায়বিচার, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করাসহ ছয় দফা দাবি তুলে ধরে।