ছেলে নিয়ে সুমিকে আর দৌড়াতে হবে না
রাজধানীর তেজকুনিপাড়ার সুমি বেগমের ছোট ঘরের চৌকিতে নানান উপহারের প্যাকেট। এই উপহার পাঠিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। সুমি বেগম জানালেন, তিনি চাল, ডাল, বাচ্চার খাবারসহ যেসব উপহার পেয়েছেন; তা দিয়ে প্রায় দুই মাস নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দিতে পারবেন।
১০ জুলাই শনিবার প্রথম আলো অনলাইনে ‘পোলা লইয়্যা পুলিশের দৌড়ানি খাইয়াও দোকান খুলি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। আর লকডাউনে রাতের বেলা একটি লম্বা চেয়ারে সুমি বেগমের ছয় মাস বয়সী ছেলে তাকবীর ঘুমাচ্ছে, পাশে বসে সুমি পান-সিগারেট বিক্রি করছেন—এ নিয়ে প্রতিবেদন ও ছবিটি চোখে পড়ে মেয়র আতিকুল ইসলামের। এরপর মেয়রের এপিএস ফরিদ উদ্দিন প্রথম আলোতে যোগাযোগ করে জানান, মেয়র আতিকুল ইসলাম এই মা ও বাচ্চার পাশে দাঁড়াতে চান।
আজ রোববার বিকেলে মেয়রের পক্ষ থেকে সুমি বেগমের হাতে বিভিন্ন উপহার তুলে দেন ফরিদ উদ্দিন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম আলো অনলাইনে এই মা আর বাচ্চার ছবি ও প্রতিবেদনটি দেখে ও পড়ে খুব খারাপ লেগেছে। এ ধরনের মানুষের পাশে কাউকে না কাউকে তো দাঁড়াতে হবে। আর বাচ্চাটা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বড় হচ্ছে। করোনার এই ভয়াবহ সময়ে মা যাতে সন্তান নিয়ে ঘরেই থাকতে পারেন, সে দিকটি বিবেচনা করেছি। এই মায়ের একটি স্থায়ী কাজের যত দিন না ব্যবস্থা করতে পারছি, তত দিন মা ও ছেলের ঘরভাড়াসহ অন্যান্য খরচ দেব।’
মেয়র আতিকুল ইসলামের পক্ষ থেকে ২৫ কেজি চাল, ৪ কেজি ডাল, ১০ কেজি আলু, ১ কেজি রসুন, ৫ কেজি পেঁয়াজ, ২ কেজি লবণ, ৫ লিটার তেল, বাচ্চার খাবার হিসেবে ১ কেজি সুজি, বাড়তি খাবার হিসেবে দুটি ল্যাকটোজেনের কৌটা উপহার হিসেবে পেয়েছেন সুমি বেগম। সুমি বেগমের তিন মাসের ঘরভাড়া বাকি ছিল, সেই তিন মাসের বকেয়া বাসাভাড়া হিসেবে ১২ হাজার টাকাও পেয়েছেন।
উপহার পাওয়ার পর সুমি বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়র আতিক স্যার পোলার খাবার ও জিনিসপত্র দিছেন। একটা কাজের ব্যবস্থা করে দেবেন বলছেন। এখন যাতে আর দোকান না খুলি, তা–ও বলছেন। যা পাইছি, তা দিয়া এক-দেড় মাস আমার আর কোনো চিন্তা নাই।’