ছয় মাসের মধ্যে বালু নদ দখলমুক্ত করার পরিকল্পনা

২০১৯ সালে বালু নদের তীরে বহুতল ভবনে উচ্ছেদ অভিযান চালায় বিআইডব্লিউটিএ। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ইছাপাড়া এলাকায়
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর পাশের বালু নদ ছয় মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ দখল ও দূষণমুক্ত করা এবং নাব্যতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। এ জন্য কমিশন সম্প্রতি একটি কমিটি গঠন করেছে।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন সূত্র জানায়, দেশের কমবেশি ৭০০ নদ–নদীর প্রায় সব কটিতেই পড়েছে দখলদারদের থাবা। অনেক নদী দখল–দূষণে মৃতপ্রায়। দেশের নদ–নদীগুলোতে ৬৩ হাজার ২৪৯ জন দখলদারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। নদ–নদীগুলোকে দখলমুক্ত করতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সম্পূর্ণ দখল ও দূষণমুক্ত করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে বালু নদকে মডেল হিসেবে নেওয়া হয়েছে মূলত সংসদীয় কমিটির একটি সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি সূত্র জানায়, গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে চার থেকে ছয় মাসের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দখল হওয়া নদীগুলোর মধ্যে অন্তত একটির অবৈধ স্থাপনা সম্পূর্ণভাবে উচ্ছেদ ও দূষণমুক্ত করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করার সুপারিশ করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে ওই সুপারিশের অগ্রগতি জানায় নদী রক্ষা কমিশন। তারা জানিয়েছে, বালু নদকে তারা মডেল হিসেবে নিয়েছে। এটি সম্পূর্ণভাবে দখল ও দূষণমুক্ত করা এবং নাব্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত ৮ সেপ্টেম্বর ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ছয় মাসের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করতে তারা এক মাসের মধ্যে একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি করবে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই নদ দখল ও দূষণমুক্ত করা হবে। এই কমিটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে।

বালু নদ দখলমুক্ত করতে গঠিত কমিটির আহ্বায়ক জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য কামরুন নাহার আহমেদ। কমিটিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, রাজউক, বিআইডব্লিউটিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন ও নৌ পুলিশের প্রতিনিধি এবং ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।

আজ সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে দেশের সব নদ-নদী পর্যায়ক্রমে দখলমুক্ত করার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে সদস্য মজাহারুল হক প্রধান, রণজিৎ কুমার রায়, সামিল উদ্দিন আহমেদ, আছলাম হোসেন এবং এস এম শাহজাদা অংশ নেন।