জাটকা নিধন বন্ধ না হলে একসময় ইলিশ থাকবে না: শ ম রেজাউল

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম আজ জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২–এর উদ্বোধন করেন
ছবি: মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে

জাটকা আহরণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যাঁরা জড়িত থাকবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেছেন, জাটকা নিধন বন্ধ না হলে একসময় ইলিশ থাকবে না।

জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২–এর উদ্বোধন করে প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এ কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে এ অনুষ্ঠান হয়। এতে রাজধানীর বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।

রেজাউল করিম বলেন, আইনলঙ্ঘনের এখতিয়ার কাউকে দেওয়া হবে না। মাঝেমধ্যে কিছু দুর্বৃত্ত দরিদ্র মৎস্যজীবীদের নিষিদ্ধ সময়ে জাটকা আহরণে সম্পৃক্ত করেন। জাটকা আহরণের নেপথ্যে থাকা ব্যক্তি, যাঁরা অবৈধ জাল তৈরি ও ব্যবহার করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে বরফকল বন্ধ রাখতে হবে, যাতে দুষ্ট লোকেরা জাটকা আহরণ করে সেটি সংরক্ষণ করতে না পারেন।

মন্ত্রী জানান, বাজারগুলোয় মোবাইল কোর্ট অব্যাহত রাখা হবে। যেখানে যিনি জাটকা নিয়ে আসবেন, তাঁকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। ইলিশসম্পদ নষ্ট করার সুযোগ কোনোভাবেই কোনো দুর্বৃত্তকে দেওয়া যাবে না।

শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, ‘ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। এ সম্পদ রক্ষা শুধু দাপ্তরিক দায়িত্ব নয়, নৈতিক কর্তব্যও বটে। এ সম্পদ রক্ষার মাধ্যমে বিশ্বের ৮০ ভাগ ইলিশ উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখতে না পারলে আমাদের ইলিশ উৎপাদনের শীর্ষ স্থান নষ্ট হয়ে যাবে। তাই জাটকা সংরক্ষণে সম্মিলিত সহযোগিতা থাকতে হবে।’
‘একজন মানবিক ও কর্মতৎপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে আমরা ব্যর্থ হতে চাই না। কোনো প্রলোভন বা দুষ্টু লোকের প্ররোচনায় কেউ যেন ভুল পথে না যায়, সেটা খেয়াল রাখতে হবে,’ বলেন শ ম রেজাউল।

শ ম রেজাউল আরও বলেন, ‘জাটকা নিধন বন্ধ করতে না পারলে একসময় ইলিশ আর থাকবে না। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে বলতে হবে, এই আকৃতির, এই রঙের, এই স্বাদের একটা মাছ ছিল, যে মাছের নাম ইলিশ। আমরা নিশ্চয়ই সেটা হতে দিতে পারি না। আমাদের লক্ষ্য মৎস্যজীবীরাই ইলিশ মাছ ধরুক, মানুষ মাছ খাওয়ার সুযোগ পাক। কিন্তু সেটা যেন ইলিশ মাছ উপযুক্ত অবস্থায় আসার পর হয়।’

‘সারা বিশ্বে উৎপাদিত ইলিশের প্রায় ৮০ ভাগ আমাদের দেশে উৎপাদিত হয়’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ইলিশের জিআই সনদ বাংলাদেশ পেয়েছে। বিশ্বে ইলিশে বাংলাদেশের যে শীর্ষ অবস্থান, এটা সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও প্রধানমন্ত্রীর সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে হয়েছে।’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুন্সিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন ও বাংলাদেশ নৌ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. শফিকুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ মাহবুবুল হক। মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার আবদুল মোমেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শীলু রায়ও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে বর্ণাঢ্য নৌ র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়।