জাপান থেকে আসা দুই শিশু আপাতত মায়ের সঙ্গে থাকবে: আদালত

এরিকো-ইমরান দম্পতি ও তাঁদের শিশুসন্তানেরা
ফাইল ছবি

জাপান থেকে আসা দুই শিশু আগামী ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের মা জাপানি নাগরিক এরিকো নাকানোর সঙ্গে থাকবে। শিশুদের বাবা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরান শরীফ সকাল নয়টা থেকে রাত নয়টার মধ্যে শিশুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বুধবার এ আদেশ দেন। এ ছাড়া শিশুদের নিয়মিত স্কুলে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বলেছেন আদালত। আদালত বলেছেন, শিশুরা তাদের বাবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ।

এর আগে দুই শিশু তাদের বাবা ইমরানের হেফাজতে থাকবে বলে গত ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিলেন। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন মা এরিকো। গত ১২ ডিসেম্বর এ নিয়ে শুনানি হয়। এদিন আদেশে বলা হয়, ১২ ডিসেম্বর রাত ১০টায় দুই শিশুকে তাদের মায়ের কাছে পাঠাতে হবে। দুই শিশু তাদের মায়ের সঙ্গে (গুলশানের বাসায়) সোম ও মঙ্গলবার থাকবে। এ ছাড়া ওই দুই শিশুকে নিয়ে আজ ১৫ ডিসেম্বর সকাল নয়টায় আদালতে আসতে বলা হয়েছিল মা এরিকো নাকানোকে।

তবে আদেশ অনুসারে, ১২ ডিসেম্বর রাত ১০টায় শিশুদের মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি বলে পরদিন সকালে আদালতকে অবহিত করেন শিশুদের মায়ের আইনজীবী। আইনজীবীর এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ওই শিশুদের বাবাকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়। পরে খাসকামরায় শিশু ও তাদের মা–বাবার বক্তব্য শোনেন আদালত।

শুনানি নিয়ে আদালত বলেন, গত দিন (১২ ডিসেম্বর) আদেশ দেওয়া হয়েছিল, যা প্রতিপালন করা হয়নি। শিশুদের তাদের মায়ের কাছে দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেই, যা হয়েছে তা চরম আদালত অবমাননাকর। আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। শিশুদের আদালতের এখতিয়ারের (দেশের) বাইরে নেওয়া যাবে না। আদালতের এই শুনানির পর ১৩ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটায় বাবা ওই দুই শিশুকে তার মায়ের কাছে (গুলশানের বাসায়) বুঝিয়ে দেন।

শিশু ও তাদের মা–বাবার বক্তব্য শুনে ১৫ ডিসেম্বর আদেশের জন্য দিন রাখেন আদালত। আদেশ অনুসারে, আজ সকালে শিশুদের নিয়ে তাদের মা আদালতে আসেন। উপস্থিত ছিলেন শিশুদের বাবাও। সোয়া নয়টার দিকে আদেশ দেন আদালত। আদালতে মায়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসানুল করিম ও মোহাম্মদ শিশির মনির। অন্যদিকে, ইমরানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১১ জুলাই এরিকো ও ইমরানের বিয়ে হয়। তাঁদের তিন মেয়েসন্তান। গত ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। পরে ছোট মেয়েকে তার নানির কাছে রেখে গত ১৮ জুলাই বাংলাদেশে আসেন এরিকো। ইমরানের কাছ থেকে ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই মেয়শিশুকে ফিরে পেতে ঢাকায় এসে

গত ১৯ আগস্ট রিট করেন তিনি। পরে ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে আরেকটি রিট করেন ইমরান। এরিকো ও ইমরানের পৃথক রিটের ওপর শুনানি নিয়ে গত ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট ইমরানের করা রিট খারিজ করে ওই আদেশ দেন।