টিকিটের দাবিতে সৌদিপ্রবাসীরা আজও সড়কে

গতকাল সোমবার কারওয়ান বাজার ও মতিঝিলে বিক্ষোভ করেন সৌদি আরব থেকে ছুটিতে দেশে এসে আটকে পড়া প্রবাসীরা
ফাইল ছবি

সৌদি আরবে যেতে উড়োজাহাজের টিকিটের দাবিতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন প্রবাসীরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে তাঁরা সড়ক অবরোধ করেন। ফলে সড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়।

গতকাল সোমবারও কারওয়ান বাজার ও মতিঝিলে বিক্ষোভ করেন সৌদি আরব থেকে ছুটিতে দেশে এসে আটকে পড়া প্রবাসীরা।

আজ সকাল ১০টার দিকে কারওয়ান বাজারে সৌদি এয়ারলাইনসের বুকিং কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন সৌদিপ্রবাসীরা। দুপুর ১২টার পর তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

বিক্ষোভকারীদের একজন রাজু আহমেদ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শুনেছি, বিমান সৌদি আরবে ১ অক্টোবর থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করবে। কিন্তু তারা ল্যান্ডিং পারমিশন পায়নি। এদিকে আমদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হবে না। ওয়ার্ক পারমিটও বাড়ানো হবে না। এটা আমরা সৌদি আরব থেকে জানতে পেরেছি। এখন আমরা কী করব?’

ছুটিতে এসে দেশে আটকে পড়া প্রবাসী কর্মীদের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সৌদি আরবে প্রবেশের সুযোগ দিয়েছে দেশটির সরকার। কিন্তু উড়োজাহাজের টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন না প্রবাসীরা। এ ঘটনায় প্রবাসী কর্মীরা গতকাল রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা বলছেন, দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া না হলে ৮০ হাজার সৌদিপ্রবাসী ফিরে যাওয়ার সুযোগ হারাবেন।

আগাম টোকেনের মাধ্যমে গত রোববার টিকিট দেওয়া শুরু করে সৌদি এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ। ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন ৩০০টি করে দেড় হাজার টিকিট দেওয়ার কথা। প্রবাসী কর্মীরা শনিবার রাত থেকেই এয়ারলাইনসের বুকিং কার্যালয়ের সামনে ভিড় করতে থাকেন। রোববার কেউ কেউ টিকিট সংগ্রহ করেন। সোমবার প্রবাসী কর্মীদের ভিড় সামলাতে না পেরে টিকিট দেওয়া বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, শর্ত সাপেক্ষে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর অনুমতি দেয় সৌদি আরব সরকার। এরপর সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে অনুমতি চায়। একইভাবে বিমানও বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা করতে সৌদি অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চায়। আকাশপথ নীতিমালা অনুযায়ী, এক দেশ আরেক দেশকে সমানসংখ্যক ফ্লাইট পরিচালনা অনুমতি দেওয়ার কথা। বেবিচক সৌদি এয়ারলাইনসকে সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট চালানোর অনুমতি দিলেও বিমানকে অনুমতি দেয়নি সৌদি কর্তৃপক্ষ। এর ফলে সৌদি এয়ারলাইনসের অনুমতি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় বেবিচক। এতে বিপাকে পড়েন সৌদি আরবে ফিরতে চাওয়া প্রবাসীরা। তাঁদের অধিকাংশেরই ফিরতি টিকিট সৌদি এয়ারলাইনস ও বিমানে করা আছে।

গতকাল বিমানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সৌদি আরবে আগামী ১ অক্টোবর থেকে বিমান সপ্তাহে আটটি ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত ল্যান্ডিং পারমিশন পায়নি।

অন্যদিকে সৌদি এয়ারলাইনস চড়া দামে টিকিট বিক্রি করছে। ওয়ানওয়ে টিকিট এক লাখ টাকার বেশি।

বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মহিবুল হক আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সৌদিপ্রবাসীদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছি। আর সৌদি এয়ারলাইনস যদি আমাদের কাছে ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন করে, তবে আমরা তা দিয়ে দেব। তারা ফ্লাইট বাড়ানোর আবেদনই করেনি। বিমান আটটি ফ্লাইট পরিচালনার জন্য প্রস্তুত আছে। তবে বিমানকে সৌদির কর্তৃপক্ষ ল্যান্ডিং পারমিশন দেয়নি।’