ঢাকার ভেতরে ফাঁকা, বের হওয়ার মুখে যানবাহনের চাপ

ঈদের আগের দিন রাজধানীর সড়কগুলো সকাল থেকেই ছিল ফাঁকা।
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা থেকে বের হওয়ার প্রতিটি পথে যানবাহনের চাপ রয়েছে। কোথাও কোথাও গাড়ির দীর্ঘ সারি। আবার কোথাও কোথাও ধীরগতিতে চলছে গাড়ি। ভোর থেকে যানবাহনের জন্য গাবতলী, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, আবদুল্লাহপুর, মহাখালী, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, কমলাপুর রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন স্থান ও বাসস্টেশনে ঘরমুখী মানুষের ভিড়ও অনেকে। এর মধ্যে সকালে বৃষ্টি এ ভোগান্তি যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আজ মঙ্গলবার সারা দিন থেমে থেমে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ঢাকা থেকে বের হয়ে বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার এই পথগুলোয় যানবাহনের চাপ ও মানুষের ভিড় থাকলেও ঢাকার ভেতরে মানুষের চলাচল সেভাবে দেখা যায়নি। বাজারগুলোয় সকাল থেকে কিছুটা ভিড় লক্ষ করা গেলেও অলিগলি বা প্রধান সড়কগুলোয় যানবাহন ও মানুষের চলাচল কম ছিল।

সড়কগুলোয় কোরবানির জন্য কেনা পশুগুলো হেলেদুলে চলছিল। অনেকটা ফাঁকা সড়কে সকাল থেকে গরু-ছাগলের দাপট দেখা গেছে। এ ছাড়া পিকআপে করে কোরবানির পশু পরিবহন করতে দেখা গেছে।

ঢাকার ভেতরে সিগনালগুলোয় গাড়ির চাপ ছিল না। ফলে ট্রাফিক পুলিশ অনেকটা আয়েশে সময় কাটিয়েছে। সার্ক ফোয়ারা মোড়ে দায়িত্ব পালন করা পুলিশ কনস্টেবল মহিউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের সময়টাতে সড়কে দায়িত্ব পালনে কিছুটা ঢিলেঢালা ভাব থাকে। কয়েকটা দিন সড়কে যানবাহনও খুব কম থাকে। তিনি জানান, সকালে মানুষের চলাফেরা কম থাকলেও আজ বিকেলে শপিং মল এলাকাগুলোয় ভিড় বেড়ে যাবে। এই পুলিশ সদস্যের মতে, করোনা আসার পর বিভিন্ন সময় লকডাউনের কারণে ঢাকার সড়কগুলো প্রায়ই ফাঁকা থেকেছে, আগে যেটা কেবল ঈদের সময় দেখা যেত।

রাজধানীর উত্তরা আজমপুর এলাকায় দেখা যায় যানবাহনের লম্বা লাইন। পদচারী–সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে যত দূর চোখ যায়, যানবাহনের স্থির অবস্থা দেখা যায়। যানবাহনগুলো চলাচল করতে না পারায় যাত্রীরা চরম বিরক্ত হচ্ছে। কেউ কেউ গাড়ি থেকে নেমে হাঁটাচলা করছে, আবার গাড়িতে উঠছে। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে দেখা যায় চরম বিরক্তি ভাব।

কমলাপুর রেলস্টেশনের মানুষের ভিড়।
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা থেকে খুলনা যাচ্ছিলেন মেহেদি হাসান। সাড়ে আটটার দিকে আজিমপুর থেকে গাবতলীর উদ্দেশে রওনা দেন। মেহেদি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাসা থেকে গাবতলী পর্যন্ত ঠিকঠাক পৌঁছেছি। সড়কে কোনো যানজট ছিল না। কিন্তু গাবতলী পৌঁছানোর পর এক “যুদ্ধাবস্থায়” পড়ে যাই। প্রচুর মানুষ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে। ঘাট পর্যন্ত যেতে বাস ও মাইক্রোবাসে উঠতে যাত্রীদের হুড়োহুড়ি।’ তিনি জানান, তাঁর গাড়ি ছাড়ার কথা সকাল ১০টায়। কিন্তু কাউন্টার থেকে জানানো হয়েছে, পাটুরিয়া ঘাটে গাড়ি আটকে পড়ায় নির্ধারিত সময়ে বাস ছাড়বে না। নির্ধারিত কোনো সময়ের কথাও কাউন্টার থেকে জানানো হয়নি। বেলা পৌনে ১১টার সময়ও মেহেদিদের জন্য নির্ধারিত বাসটি গাবতলী এসে পৌঁছায়নি।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঢাকায় আজ মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। সারা দিনই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। তবে ঈদের দিন ঢাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে।