ঢাকায় আবাসিক ভবন হবে সর্বোচ্চ আটতলা

আবাসিক ভবনের সর্বোচ্চ উচ্চতা

  • উত্তরায় ৭-৮ তলা, গুলশান, বনানী ও বারিধারায় ৬-৮ তলা

  • খিলক্ষেত, কুড়িল ও নিকুঞ্জ এলাকায় তলা

  • মিরপুরে ৪-৭ তলা, মোহাম্মদপুর ও লালমাটিয়ায় ৫-৮ তলা

  • পুরান ঢাকায় ৪-৬ তলা

ধানমন্ডিতে এখন সর্বোচ্চ ১৪ তলা পর্যন্ত আবাসিক ভবন নির্মাণ করা যায়। গণপরিসর বা সাধারণ মানুষের জন্য জায়গা না ছাড়লে ব্যক্তি পর্যায়ে এই এলাকায় ৮ তলার ওপর আর ভবন নির্মাণ করা যাবে না। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউকের নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ-২০১৬-২০৩৫) এই প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে এটি চূড়ান্ত হওয়ার কথা। নতুন ড্যাপের মেয়াদ হবে ২০ বছর।

নতুন ড্যাপে আবাসিক ভবনের উচ্চতাসংক্রান্ত প্রস্তাবটি শুধু ধানমন্ডি নয়, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ঢাকা শহরের সব এলাকার জন্য তা প্রযোজ্য হবে। আর রাজউকের আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন এবং সাভার পৌর এলাকায় আবাসিক ভবন হবে সর্বোচ্চ ৬ তলা।

নগর পরিকল্পনাবিদ এবং নতুন ড্যাপ তৈরির সঙ্গে যুক্ত রাজউকের কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকা শহরের স্বার্থেই এই প্রস্তাব যুক্ত করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহরের ওপর চাপ কমবে ও নাগরিক সেবার মান বাড়বে। তবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন রাজউকেরই কিছু কর্মকর্তা। এ ছাড়া আবাসন ব্যবসায়ীরাও রাজউকের এই প্রস্তাবকে অবাস্তব বলছেন। তাঁদের দাবি, এর বাস্তবায়ন হলে ঢাকা শহরে ফ্ল্যাটের দাম ৩০-৪০ শতাংশ বেড়ে যাবে, আবাসন ব্যবসায় ধস নামবে।

এখন নতুন ড্যাপের বিভিন্ন দিক নিয়ে অংশীজনদের মতামত (শুনানি) নিচ্ছে রাজউক। অনলাইনে রাজউকের ওয়েবসাইটে ও সরাসরি রাজউক কার্যালয়ে গিয়ে মতামত দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এটি আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।

গত ২ সেপ্টেম্বর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নতুন ড্যাপের খসড়া আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। এতে জনঘনত্ব অনুযায়ী ভবনের এমন উচ্চতা নির্ধারণের পাশাপাশি জরিমানা দিয়ে অনুমোদনহীন ভবন বৈধ করা, ভূমির পুনরুন্নয়ন, ভূমি পুনর্বিন্যাস, উন্নয়ন স্বত্ব প্রতিস্থাপন পন্থা (জলাশয় রক্ষাসংক্রান্ত পরিকল্পনা), ট্রানজিটভিত্তিক (পরিবহনের স্টেশন) উন্নয়নসহ বেশ কিছু নতুন কর্মকৌশল যুক্ত করা হয়েছে, যেগুলো আগের কোনো পরিকল্পনায় ছিল না।

রাজউকের সদস্য (পরিকল্পনা) আজহারুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, শুনানিতে আসা মতামতগুলো নিয়ে ৪ নভেম্বরের পর একটি সেমিনারের আয়োজন করা হবে। এরপর আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন ড্যাপ চূড়ান্ত হবে বলে আশা করছেন তাঁরা। তখন ২০১০ সালে পাস হওয়া ড্যাপের আর কার্যকারিতা থাকবে না।

জনঘনত্ব অনুযায়ী ভবনের উচ্চতা

রাজধানীতে এখন ভবন নির্মাণ করা হয় ২০১০ সালের ড্যাপ ও ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুসারে। ২০০৮ সালে করা এই বিধিমালায় জমির আয়তন অনুযায়ী কত তলা বা উচ্চতার ভবন নির্মাণ করা যাবে, তা উল্লেখ আছে। এই বিধিমালার কারণে বেশি উচ্চতার আবাসিক ভবন নির্মাণের সুযোগ তৈরি হয়। উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, এর আগের বিধিমালায় (১৯৯৬ সালের) ধানমন্ডিতে যে জমিতে ৬ তলা ভবন নির্মাণ করা যেত, ২০০৮ সালের বিধিমালায় সেই জমিতে ১৪ তলা ভবন হচ্ছে।

নগর পরিকল্পনাবিদদের মতে, ২০০৮ সালের বিধিমালাই ঢাকা শহরের বাসযোগ্যতা হারানোর অন্যতম কারণ। তাঁদের যুক্তি, প্রতিটি এলাকার নিজস্ব ধারণক্ষমতা আছে, যে অনুযায়ীই ভবনের উচ্চতা (ফ্লোর এরিয়া রেশিও) হওয়া উচিত। তা না করে শুধু ভবনের উচ্চতা বাড়ালে ওই এলাকার ধারণক্ষমতার বেশি মানুষ থাকবে, নাগরিক সেবা ভেঙে পড়বে। গত ১২ বছরে যে কাজটি হয়েছে। এই বিধিমালা অনুযায়ী, পুরান ঢাকা, গুলশান, ধানমন্ডি বা পূর্বাচলেও একই উচ্চতার আবাসিক ভবন তৈরি করা যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, প্রতিটি এলাকার চরিত্র ভিন্ন, নাগরিক সেবার মানও এক নয়।

এই সমস্যার সমাধান এবং প্রতিটি এলাকার চরিত্র ও নাগরিক সেবা অনুযায়ী আবাসিক ভবনের উচ্চতা নির্ধারণের জন্যই নতুন ড্যাপে এলাকাভেদে ভবনের উচ্চতা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান রাজউকের কর্মকর্তারা।

নতুন ড্যাপ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রাজউকের অন্তর্ভুক্ত ১ হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে মোট ৪৬৮টি (ব্লক) ভাগ করা হয়েছে। পরে জরিপ করে প্রতিটি ব্লকের জনসংখ্যার ধারণক্ষমতা, সড়ক অবকাঠামো, নাগরিক সুবিধা এবং সেখানে উন্নয়নের ধরনের ওপর ভিত্তি করে আবাসিক ভবনের উচ্চতা নির্ধারণ করা হয়েছে। যে ব্লকে নাগরিক সুবিধা ও ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক ভালো, উন্মুক্ত স্থান বেশি, সেই ব্লকের ভবনের উচ্চতা বেশি ধরা হয়েছে। আর যেখানে বিপরীত চিত্র পাওয়া গেছে, সেখানে ভবনের উচ্চতা কম ধরা হয়েছে।

এই হিসাবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের খিলক্ষেত, কুড়িল, নিকুঞ্জ এলাকায় ৬ তলা; উত্তরায় ৭-৮ তলা; গুলশান, বনানী, বারিধারা এলাকা ৬-৮ তলা; মিরপুর এলাকায় ৪-৭ তলা; মোহাম্মদপুর-লালমাটিয়া এলাকায় ৫-৮ তলা উচ্চতার আবাসিক ভবন নির্মাণ করা যাবে। অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন পুরান ঢাকায় ৪-৬ তলা উচ্চতার আবাসিক ভবন নির্মাণ করা যাবে। গাজীপুরের দু-একটি এলাকা ছাড়া বেশির ভাগ এলাকারই আবাসিক ভবনের সর্বোচ্চ উচ্চতা হবে ৪-৬ তলা।

তবে যেসব ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়ে গেছে বা ভবন নির্মাণের অনুমোদন ইতিমধ্যে নেওয়া হয়ে গেছে বা নতুন ড্যাপ চূড়ান্ত হওয়ার আগে নির্মাণ অনুমোদন নেওয়া হবে সে ক্ষেত্রে উচ্চতার এই বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে না। এ ছাড়া নতুন ড্যাপে বলা হয়েছে, পাঁচ বছর পরপর প্রতিটি ব্লকের ধারণক্ষমতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা বা কৌশল যুগোপযোগী করা হবে। এতে কোনো এলাকার রাস্তাঘাট, উন্মুক্ত জায়গা বাড়লে ওই এলাকার ভবনের উচ্চতা বৃদ্ধির অনুমতি দিতে পারবে রাজউক।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা শহরে যে হারে মানুষ বাড়ছে, তার রাশ টেনে না ধরতে পারলে এই শহরকে আর বাঁচানো যাবে না। তাই এলাকাভিত্তিক মানুষের ধারণক্ষমতা বা জনঘনত্ব বিবেচনা নিয়েই ভবন তৈরি করতে হবে। এটি জমির মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে। তাঁর মতে, অতি উঁচু ভবন তৈরির সুযোগ থাকলে জমির দাম বেড়ে যায় এবং সুউচ্চ ভবন নির্মাণের খরচও বেশি। তখন সেটি আর সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে না। ভবনের উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ করলে জমির দাম কমার পাশাপাশি ভবন নির্মাণে ব্যয় কমবে। এতে সাধারণ মানুষের আবাসনের সুযোগ বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

অযৌক্তিক বলছেন আবাসন ব্যবসায়ীরা

নতুন ড্যাপ নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়েছে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। নগর পরিকল্পনাবিদেরা জনঘনত্ব অনুযায়ী আবাসিক ভবনের উচ্চতা নির্ধারণকে ইতিবাচকভাবে দেখলেও সংগঠনটি এই পরিকল্পনাকে সময় উপযোগী নয় বলে মনে করে। তারা বলছে, এই প্রস্তাব অযৌক্তিক।

রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন প্রথম আলোকে বলেছেন, ঢাকা শহরে জমির দাম অনেক বেশি। অতি দামে কেনা জমিতে সর্বোচ্চ ৮ তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ করা গেলে ফ্ল্যাটের দাম ৩০-৪০ শতাংশ বেড়ে যাবে। তখন এই ব্যবসা হুমকির মুখে পড়বে।

নতুন ড্যাপে বলা হয়েছে, ৮ তলার ওপর ভবন নির্মাণ করতে গেলে প্রতি বর্গফুটে খরচ বেড়ে যায়, তখন সেটি আর মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে না। এর সঙ্গে দ্বিমত করে আলমগীর শামসুল আলামিনের দাবি, এই তথ্য সঠিক নয়। নতুন ড্যাপ নিয়ে ইতিমধ্যে রাজউক চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেছেন। রিহ্যাবের সঙ্গে আলোচনা না করে ড্যাপ চূড়ান্ত না করতে রাজউক চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেছেন তাঁরা।

ব্যতিক্রম

ড্যাপে উল্লেখ করা ভবনের উচ্চতা নির্ধারণসংক্রান্ত শর্তটি শুধু আবাসিক ভবনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, অনাবাসিক ভবনের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে না। এর পাশাপাশি স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য ভবনে নির্দিষ্ট কিছু জায়গা বা ফ্ল্যাট রাখলে, কমিউনিটির মানুষের ব্যবহারের জন্য জায়গা ছাড়লে, উন্নয়ন স্বত্ব বিনিময় করলে নির্ধারিত উচ্চতার চেয়ে বেশি উঁচু আবাসিক ভবন নির্মাণ করা যাবে। আবার কোনো জমি প্লট আকারে ভাগ না করে একসঙ্গে করে ‘ব্লক’ তৈরি করে ভবন নির্মাণ করলে অতিরিক্ত সুবিধা (অনুমতি সাপেক্ষে উচ্চতা বাড়ানো যাবে) পাওয়া যাবে।

এ সম্পর্কে ড্যাপে বলা হয়েছে, দুই একর পর্যন্ত (শূন্য দশমিক ৬৬ থেকে ২ একর) ব্লকের (জমি) ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ জায়গা ছেড়ে দিলে (পার্ক, খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান) ১০ তলা উঁচু আবাসিক ভবন নির্মাণ করা যাবে। দুই থেকে পাঁচ একর ব্লকের ৫০ শতাংশ উন্মুক্ত স্থান হিসেবে ছেড়ে দিলে ১৫ তলা এবং পাঁচ একরের বেশি ব্লকের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ জায়গা উন্মুক্ত স্থান হিসেবে ছেড়ে দিলে যত খুশি তত উঁচু আবাসিক ভবন নির্মাণ করা যাবে। তবে সে ক্ষেত্রে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের উচ্চতা সীমার ছাড়পত্রের প্রয়োজন হবে।

এ ছাড়া মেট্রোরেল ও বাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের জন্য নির্ধারিত স্টেশন, আন্তজেলা বাস টার্মিনাল এবং কমলাপুর রেলস্টেশনের ২০০-৫০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে বেশি জনঘনত্ব উৎসাহিত করা হবে, ফলে এসব এলাকার আবাসিক ভবনের উচ্চতা বেশি হবে।

অন্যান্য কর্মকৌশল

জনঘনত্ব বিন্যাস ছাড়াও নতুন ড্যাপে বেশ কয়েকটি কর্মকৌশল বা পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জরিমানা দিয়ে অনুমোদনহীন ভবনের বৈধ করা। রাজউক সূত্রে জানা গেছে, সংস্থাটির আওতাধীন এলাকায় নির্মিত ভবনের অন্তত ৮০ শতাংশ কোনো না কোনোভাবে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। এসব ভবনের মালিকদের নিয়ম মানতে বাধ্য করতে পারেনি রাজউক। এমন অবস্থায় জরিমানা দিয়ে অবৈধ ভবন বা ভবনের অবৈধ অংশ বৈধ করার সুযোগ থাকছে। অনুমোদন নেই কিন্তু নির্মাণের বিধি অনুসরণ করেছে আবার অনুমোদন আছে কিন্তু বিধি মানা হয়নি এবং অনুমোদনও নেই, বিধিও মানেনি—এই তিন ধরনের ভবন জরিমানা দিয়ে বৈধতা পাবে। তবে মহাপরিকল্পনার ব্যত্যয় ঘটিয়ে নির্মাণ করা ভবন এই সুবিধা পাবে না।

উন্নয়ন স্বত্ব প্রতিস্থাপন পন্থার ক্ষেত্রে কৃষি বা জলাভূমির মালিককে একটি সনদ দেওয়া হবে। যেমন কারও জমি যদি জলাভূমির অন্তর্ভুক্ত থাকে, তাহলে ওই ভূমির একটি বাজারদর নির্ধারণ করে রাজউক একটি সনদ দেবে। এই সনদ তিনি চাইলে অন্য ব্যক্তির কাছে বিক্রি করতে পারবেন। তবে জলাভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। আবার যে ব্যক্তি সনদ কিনবেন, সেই ব্যক্তি ওই জলাভূমির মালিক হবেন না। তবে ওই সনদ দেখিয়ে তিনি (যিনি কিনেছেন) অন্য জায়গায় ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুবিধা (ভবনের উচ্চতা বাড়ানো) পাবেন। এতে জলাভূমি রক্ষা করা সহজ হবে বলে মনে করে রাজউক।

আগের ড্যাপ বাস্তবায়িত হয়নি

ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে এর আগে ২০১০ সালে প্রথম ড্যাপ পাস করে সরকার। কিন্তু ড্যাপ পাসের পর আবাসন ব্যবসায়ীসহ প্রভাবশালীদের চাপে এটি চূড়ান্ত করতে মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করতে বাধ্য হয় সরকার। এই কমিটি গত ১০ বছরেও ড্যাপ চূড়ান্ত না করে উল্টো ড্যাপে দুই শতাধিক সংশোধনী আনে। এসব সংশোধনীর মাধ্যমে কার্যত জলাভূমি ভরাটের বৈধতা দেওয়া হয়। প্রথম ড্যাপের মেয়াদ ছিল ২০১৫ সাল পর্যন্ত। পরে অরও দুই বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়। এখন বলা হচ্ছে নতুন ড্যাপ চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত আগের ড্যাপ কার্যকর থাকবে।

নতুন ড্যাপ চূড়ান্ত করার আগে সবার মতামত নেওয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক বলেই মনে করেন নগর গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন পেশাজীবী, বিশেষজ্ঞ ও নাগরিকদের দায়িত্ব হচ্ছে এটি পর্যালোচনা করে মতামত দেওয়া। তারপরই বলা যাবে, নতুন ড্যাপ কেমন হলো।

এই নগরবিদ বলেন, ২০১০ সালের ড্যাপেও অনেক ভালো ভালো সুপারিশ করা হয়েছিল। সেগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব ছিল রাজউকের। কিন্তু কেন বাস্তবায়ন করা যায়নি, তা খতিয়ে দেখা উচিত। তাঁর মতে, শুধু ভালো পরিকল্পনা হলেই হবে না, বাস্তবায়নের সদিচ্ছাও থাকতে হবে। না হলে কোনো পরিকল্পনাতেই লাভ হবে না।