ঢাবির ঘ ইউনিট বাতিলের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক: ছাত্র ফ্রন্ট

ঢাবির ঘ ইউনিট বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে ছাত্র ফ্রন্টের সংবাদ সম্মেলন। ১৫ ফেব্রুয়ারি, মধুর ক্যানটিনছবি: প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তকে ‘অগণতান্ত্রিক ও অযৌক্তিক’ বলে আখ্যা দিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী)। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঘ ইউনিট বাদ দিয়ে চারটি ইউনিটের (ক, খ, গ ও চ) অধীন ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি অংশ আন্দোলনে নামারও ঘোষণা দিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে ঘ ইউনিট বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা। অনুষদের ১৬টি বিভাগের একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ঘ ইউনিট বাতিল করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়। ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিট বাতিলের অগণতান্ত্রিক ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে’ সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আরাফাত সাদ। এ সময় বলা হয়, ঘ ইউনিট বাতিলের ফলে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র একবার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবে। এর আগে উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীরা স্ব-স্ব ইউনিটের পাশাপাশি ঘ ইউনিটের মাধ্যমে দুইবার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেতেন। নিজ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফল করতে ব্যর্থ হওয়া শিক্ষার্থীরা ঘ ইউনিটের মাধ্যমে আরেকবার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেতেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সিদ্ধান্তের কারণে সুযোগটি এখন আর থাকছে না। কয়েক বছর আগেই দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ বাতিল করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি স্নাতক প্রথম বর্ষে হাজারখানেক আসন কমানোর সিদ্ধান্তের কারণে ঘ ইউনিট বাতিল হলে শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ সংকুচিত হবে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের পেছনে সময়সাপেক্ষ ভাবনা ও যথাযথ আলাপ-আলোচনা প্রয়োজন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হুট করেই ঘ ইউনিট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রশাসন অনেকটা দায়সারা উপায়ে ও আড়ালে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষার্থীদের দুর্দশার কথা না ভেবে আলোচনা ছাড়াই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ঘ ইউনিট বাতিলের পর শিক্ষার্থীরা কীভাবে নিজেদের বিভাগ পরিবর্তন করে অন্য বিভাগের বিষয়ে ভর্তি হবেন, এ বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পাওয়া যায়নি। করোনার বন্ধে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা মারাত্মক মানসিক ও একাডেমিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ঘ ইউনিট বাতিলের মতো অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত তাঁদের সামগ্রিক কষ্ট বাড়িয়ে দেবে।

ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মণের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, সহসভাপতি সাদেকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ-১৯৭৩ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পর্যায়ের ভর্তি পরীক্ষাবিষয়ক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট একাডেমিক কমিটিগুলোর। ফলে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ১৬ বিভাগের একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ঘ ইউনিট বাতিল করা হবে অধ্যাদেশ-পরিপন্থী।